জনপ্রিয়তা আর রুপালি পর্দার মোহ থেকে এখন তিনি অনেক দূরে।বাংলা সিনেমায় একসময় যার বিশাল আধিপত্য ছিল আর ছিল অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা তুমুল জনপ্রিয়তা সেই সুপারহিট নায়িকাদের একজন হচ্ছেন অঞ্জু ঘোষ।
জীবিকার তাগিদে এখনো কাজ করেন কলকাতার যাত্রাপালায়। বয়সের কারণে আগের মতো মুখ্য চরিত্রে আর অভিনয় করতে পারছেন না। মা, খালা জাতীয় ভূমিকায় দেখা যায় তাকে।
যে কারণে রুজি-রোজগার কমে গেছে। থাকেন সল্ট লেক রোডে। জানান অঞ্জুর ঘনিষ্ঠ এক সূত্র। চলতি বছরের মে মাসে ঢাকার কয়েকজন সাংবাদিক কলকাতায় অঞ্জু ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন।
ঢাকার চলচ্চিত্র জগৎ ও চলচ্চিত্রকারদের সম্পর্কে জানতে চান তিনি। দিতি, চাষী নজরুল ইসলাম, বুলবুল আহমেদ, শহীদুল ইসলাম খোকন, মোহাম্মদ হান্নান, শিবলী সাদিক, আহমদ জামান, আওলাদ হোসেন মারা গেছেন জেনে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে কিছু সময় আনমনা থাকেন।
অঞ্জু ঘোষ বলেন, ‘কলকাতার চেয়ে ঢাকার চলচ্চিত্রের সময়টা অনেক বর্ণিল আমার কাছে। দীর্ঘ ১৬ বছর কাজ করেছি নিজ দেশের ছবিতে।
সময়মতো ঘুম আর খাওয়া দাওয়া নেই। আজ কক্সবাজার তো কাল মানিকগঞ্জের ঝিটকায়। পরশু আবার এফডিসিতে। সে কি যে এক আকাশ পাতাল ব্যস্ততা ছিল আমার।
চিত্রালীর বেলাল আমার ঘুমের ছবি তুলে ছাপিয়ে দিল। আওলাদ ছায়াছন্দে আমার হাঁটুর উপরে শাড়ি পরা ছবি ছাপিয়ে লিখে দিল দেশীয় চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার আগমন। এখনো সেই সময়গুলো মনে করে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হই।
আহমেদ জামান চৌধুরী, হীরেন দে, ইমরুল শাহেদ ছিলেন আমার অভিভাবকতুল্য। তাদের আশীর্বাদে অভিনেত্রী অঞ্জু হতে পেরেছি। বিখ্যাত এইচ এম ভি কোম্পানি গোল্ডেন ডিস্ক দিয়ে সম্মান জানাল আমাকে।’
অঞ্জু ঘোষ বলেন, ‘দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না আমার। স্বল্প সময়ে ক্যারিয়ারের রমরমা অবস্থা দেখে অনেকেই আমার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে।
মানে ফিল্মি পলেটিক্সের শিকার হই আমি। তাই বাধ্য হয়েই কলকাতায় স্থায়ী হই।’ দেশে খুব একটা আসেন না এবং আসারও ইচ্ছা নেই অঞ্জু ঘোষের।
১৯৯৬ সালে কলকাতায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানকার মঞ্চ ও ছবিতে নিয়মিত হন। ভারতেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। প্রথমে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ছবিতে অভিনয় করেন।
এই ছবিটি সেখানে যেদিন মুক্তি পায় সেদিনই মুক্তি পেয়েছিল বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের ‘হাম’ ছবিটি। কিন্তু ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ছাড়িয়ে গিয়েছিল ‘হাম’ ছবির ব্যবসাকে।
অঞ্জুর ছবিটি দেখে অমিতাভ বচ্চন তার অভিনয়ের প্রশংসা করেছিলেন। সেখানে অঞ্জু-তাপস জুটি খুব জনপ্রিয় ছিল। কলকাতায় প্রায় দুডজন ছবিতে কাজ করেন।