ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দুই দিনের খেলা শেষে এগিয়ে বাংলাদেশই। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৮৯ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ড পিছিয়ে ছিল ২৯ রানে। কিউইদের হাতে তখন অবশিষ্ট ৩ উইকেট। আর ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের সুযোগ দেখছেন টাইগাররা। গতকাল দিন শেষে বাংলাদেশের পেস তারকা তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে আমাদের জয় পাওয়া সম্ভব। আমাদের সামর্থ্য রয়েছে।’ হ্যাগলি ওভালের পরিসংখ্যানও বলে তেমনই। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করতে পারলে জয়ের সম্ভাবনা স্পষ্টই টাইগারদের। অবশ্য প্রথম ইনিংসের শেষ তিন উইকেটে ব্ল্যাকক্যাপরা কতক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকে ও কত রান যোগ করতে পারে সেটাও বিষয়। সেই সঙ্গে ব্যাট করতে নেমে ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের পুনরাবৃত্তি থেকেও বাঁচতে হবে তামিম ইকবাল বাহিনীকে। গতকাল দিন শেষে বাংলাদেশের তরুণ পেস বোলার তাসকিন আহমেদও জানান নিজেদের সম্ভাবনা ও সুযোগের কথা। তবে তিনি এবার সতর্ক। স্পষ্ট করেই বলেন, খুশি হওয়ার কিছুই নেই। ২৬০ রানে ওদের ৭ উইকেট পড়েছে, অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে এখনও খুশির কিছু নাই। কারণ, খেলার এখনও অনেক বাকি। আজ (গতকাল) যেহেতু খেলা শেষ, কাল (আজ) সকালে এসে আমরা ওদের যত কম রানে সম্ভব গুটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। তারপরে আমাদের ব্যাটসম্যানরা যদি ভালো করে আর ওদের আমরা একটা বড় টার্গেট দিতে চাইবো।’
ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল মাঠে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড এর আগে ম্যাচের চতুর্থ ও নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেছে মাত্র ২ বার। আর এই দুই বারই পেয়েছে তারা ৮ উইকেটের জয়। দু’বারই কিউইরা জয় দেখে এশিয়ার ক্রিকেটের দুই শক্তি পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। গত বছর চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০৫ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেটে হারিয়ে তারা পৌঁছে যায় জয়ের লক্ষ্যে। আর কাকতালীয়ভাবে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও নিউজিল্যান্ড জয় কুড়ায় চতুর্থ ইনিংসে ১০৫ রানের টার্গেটে। ওই দুই ম্যাচে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসতো নয়ই, দ্বিতীয় ইনিংসও খুব একটা ভালো ব্যাট করতে পারেনি সফরকারীরা। তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘এখানে জয় তো অবশ্যই অনেক বড় অর্জন হবে। হয়তো অনভিজ্ঞতা আছে কিন্তু আমাদের জেতার সামর্থ্যও আছে। এমন পরিস্থিতি থেকে আমরা জিতে দেখিয়েছি। হয়তো সেটা নিজের দেশের মাটিতে ছিল। এখানেও তা সম্ভব। আমাদের সেই স্কিল আছে। আমরা যদি আমাদের সেরাটা খেলতে পারি তাহলে জিততে পারি।’
এবারের নিউজিল্যান্ড সফরে এখন পর্যন্ত টাইগারদের প্রাপ্তি শুধু হার আর হার। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ওয়েলিংটন টেস্টে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ দল। কিন্তু শেষ হাসি হাসতে পারেনি ব্যাটিং ব্যর্থতায়। টেস্ট সিরিজের এই শেষ ম্যাচটি আসলে টাইগারদের সামনে কেবল এই সফরেই নয়, ব্ল্যাকক্যাপদের মাটিতে ইতিহাস পরিবর্তনেরও সুযোগ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোনো ফরমেটের ক্রিকেটেই জয়ের স্মৃতি নেই বাংলাদেশের। তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘আকাশ কুসুম কল্পনা নয়। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের সামর্থ্য আছে এখানে টেস্ট জেতার।’ এই জন্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ টেস্ট জয়কে অনুপ্রেরণা হিসেবে সামনে আনেন এই তরুণ ক্রিকটোর। তিনি বলেন, ‘যদিও সেটা নিজ মাটিতে চেনা-জানা ও অনুকূল কন্ডিশনে। তারপরও নিজ সামর্থ্যের ওপর আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা আছে। আমরা যদি সবটুকু উজার করে চেষ্টা করি এবং সামর্থ্যের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে পারি তাহলে অবশ্যই জয় পাবো।