Sunday, April 21

চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে? তাহলে এখন এই জেনে নিন কিভাবে ঘন করে নিবেন…

সমস্যা: আমার বয়স ২২ বছর। আমার মাথার তালুর উপরের চুল উঠে পাতলা হয়ে যাচ্ছে। কীভাবে চুল ঘন করবো ?

সমাধান: আপনার প্রশ্নের বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে আপনার টাক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এটি আপনার বংশগত কি না খেয়াল করুন। পারলে চুলের একটু বিশেষ যত্ন নেয়ার চেষ্টা করুন। নতুন করে চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে জানতে নিচে কয়েকটি এই বিষয়ক পোস্ট দেয়া হল। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন পোস্টগুলো পড়ে। ধন্যবাদ

১. মাথায় টাক পড়ে যাচ্ছে? জেনে নিন ৪টি সহজ সমাধান :
ছেলেরা বরাবরই শরীরের যত্নের ব্যাপারে উদাসীন। সেই সাথে চুল ও ত্বকের ব্যাপারেও। সপ্তাহে ১ টি দিনও তেল দেয়া কিংবা শ্যাম্পু করা হয়ে ওঠে না অনেকেরই। কিন্তু এতে করে মাথার ত্বক এবং চুলের ফলিকলের অনেক ক্ষতি হয়। যার ফলে চুল পড়া শুরু হয় যা শেষ পর্যায়ে টাকে গড়ায়। তাই ছেলেদের কিছু যত্ন নেয়া উচিৎ চুলের প্রতি এই টাক থেকে মুক্তি পেতে চাইলে। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক কম সময়ে টাকের সমস্যা থেকে মুক্তি ও নতুন চুল গজানোর কিছু টিপস।
অলিভ অয়েল, মধু ও দারুচিনির হেয়ার মাস্ক

চুলের ঘনত্ব ও দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অলিভ অয়েল গরম করে নিন। এরপর এতে ১-২ চা চামচ মধু এবং ১ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই হেয়ার মাস্ক চুলের গোঁড়ায় মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ১৫-২০ মিনিট চুলে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের গোঁড়া মজবুত হবে এবং টাক পড়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে।
মেহেদী এবং সরিষার তেলের হেয়ার মাস্ক

এই মাস্কটি তৈরি করতে লাগবে মেহেদী পাতা ১০০ গ্রাম এবং সরিষার তেল ২৫০ গ্রাম। একটি প্যানে সরিষার তেল ঢেলে গরম হতে দিন। এরপর এতে মেহেদী পাতাগুলো দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে তেল ঠাণ্ডা হতে দিন। মেহেদী পাতা ছেঁকে নিয়ে এই তেল চুলের গোঁড়ায়, মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ১ ঘণ্টা বাদে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। বেঁচে যাওয়া বাকি তেলটুকু বোতলে ভরে রেখে দিন। এই মাস্কটি প্রতিদিন ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।
জবা ফুল ও লেবুর রসের হেয়ার মাস্ক

১ গ্লাস পানি একটি পাত্রে নিয়ে ফুটতে দিন। পানি ফুটে উঠলে এতে ২ টি জবাফুল দিয়ে ৩/৪ মিনিট আরও ফুটিয়ে নিন। এরপর পানি ঠাণ্ডা হতে দিন। পানি ঠাণ্ডা হয়ে এলে ছেঁকে নিয়ে এতে কএয়ক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে নিন। চুল শ্যাম্পু করে ধোয়ার পর এই মিশ্রণটি যেখানে টাক পড়া শুরু করেছে সেখানে লাগিয়ে রাখুন। জবা ফুলের রস নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।
নিমপাতার ব্যবহার

৩/৪ গ্লাস পানি নিয়ে এতে ১০/১২ টি নিম পাতা ফুটতে দিন। পানি ফুটে অর্ধেক হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এই পানি ঠাণ্ডা হলে চুল ধোয়ার কাজে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।

২. পুরুষের টাক সমস্যা প্রতিরোধের ৬টি কার্যকরী উপায়

বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুরুষ টাক সমস্যায় ভুগে থাকেন। নানান কারনে পুরুষেরা এই সমস্যার শিকার হন। চুল পড়ার হার বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্টি হয় টাকের। দিনে প্রায় ১০০টি চুল পড়াকে মোটামুটি স্বাভাবিক ধরা হয়ে থাকে। কারন নতুন চুল গজানোর জন্যও চুল পড়ে। কিন্তু এর চেয়ে বেশী চুল পড়া শুরু হলে এবং নতুন চুল না গজালে তা অবশ্যই লক্ষণীয় ব্যাপার। টাক সমস্যা ছেলেদের জন্য একটি অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক একটি সমস্যা। কারন মাথায় চুল কমে গেলে অনেকেই নিজেকে নিয়ে একটু হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন।

কিন্তু ছেলেরা চাইলে একটু সতর্কতা অবলম্বন করে এই সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারেন। এর জন্য শুধু ছেলেদেরকে অনুসারী হতে হবে মেয়েদের। ছেলেদের একটি বদঅভ্যাস হলো দেহ, চুল, ত্বক এসবের প্রতি তেমন যত্নশীল না হওয়া। আর এরই প্রভাব পড়ে দেহের ওপর। সুতরাং ভাগ্যকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, নিজে সতর্কতার সাথে একটু যত্নশীল হন। দেখে নিন টাক থেকে বাঁচার কিছু উপায়।
নিয়মিত হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিস্কার রাখুন

ছেলেরা গোসল খুবই তাড়াহুড়ো করে করেন। চুল কম বলে সপ্তাহে ২ বারও শ্যাম্পু ব্যবহার করেন না। কিন্তু এটা খুবই ক্ষতিকর আপনার চুলের জন্য। প্রতিদিন না হলেও ১ দিন পরপর শ্যাম্পু করুন চুলে।

আর এক্ষেত্রে বেছে নিন কোন হালকা শ্যাম্পু বা বেবি শ্যাম্পু। চুলের গোড়ায় ময়লা জমতে দেবেন না কোনো ভাবেই। ময়লা জমলেই চুল পড়া বেড়ে যায়।
তেল ব্যবহার করুন

ছেলেদের মধ্যে চুলে তেল দেয়ার ব্যাপারটি একদমই দেখা যায় না। কিন্তু চুলের গোড়া শক্ত করার জন্য চুলে তেল দেয়া খুব জরুরী। রাতের বেলা একটু তেল নিয়ে বসে যান চুল ম্যাসাজ করতে। সারারাত রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুলের গোড়া মজবুত হবে। নারকেল তেল, বাদাম তেল কিংবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। সরিষার তেল থেকে দূরে থাকুন।
পেঁয়াজ বা রসুন কিংবা লেবুর রস ব্যবহার করুন

চুলের প্রতি একটু যত্নশীল হন। চুলে পেঁয়াজ বা রসুন কিংবা লেবু- যে কোনো একটি চিপে নিয়ে রস চুলে লাগান। নিয়মিত ১ সপ্তাহ ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হবে। টাকের হাত থেকে বাঁচবেন।
গ্রিন টী ব্যবহার করুন

চুলে গ্রিন টীর ব্যবহার নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। ব্যবহার করা গ্রিন টীর টী-ব্যগ কিংবা চিনি ছাড়া তৈরি গ্রিন টী চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ বার করুন। চুল পড়া বন্ধ করবে ও নতুন চুল গজাবে।
চুল শুকোতে দিন

চুল ছোট বলে গোসল করে বের হবার পর মাথায় তোয়ালে ঘষে ঘষে চুল শুকোতে দেখা যায় অনেককেই। এই ব্যাপারটি সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলুন। তোয়ালে মাথায় ঘোষলে চুলের গোড়া নরম হয়। চুল আপনা আপনি শুকোতে দিন। এতে চুলের গোড়ায় আদ্রর্তা ঠিক মত বজায় থাকবে।
ধূমপান বন্ধ করুন

যদি দেখেন আপনার চুল পড়ে যাচ্ছে কিন্তু নতুন চুল গজাচ্ছে না তাহলে জেনে রাখবেন এটা আপনার ধূমপানের অভ্যাসের সাথে সম্পর্কিত। ধূমপানের কারনে নতুন চুল গজানো বন্ধ হয়ে যায়। যে চুল গুলো পড়ে যায় তার জন্য নতুন করে চুল না গজালে টাক পরা অবশ্যম্ভাবী। তাই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।
চুল পরা রোধের কিছু টিপস

•দিনে ৬-৮ গ্লাস পানি পান করুন।
•ভেজা চুল আঁচড়াবেন না।
•ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খান।
•ব্যায়াম করুন।
•অতিরিক্ত স্টাইলিং থেকে দূরে থাকুন।
•যতটা সম্ভব মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন।

৩. টাক পড়ে গিয়েছে মাথায়? জেনে নিন নিজেকে কীভাবে আকর্ষণীয় দেখাবেন :
টাক পড়ে গেলে অনেকেই মনে করেন দেখতে বিশ্রী দেখাচ্ছে। আমাদের সমাজে টাক মাথা মানুষের কদর একটু কমই। বিশেষ করে বিয়ের পাত্র হিসেবে টাক মাথা ছেলেরা তো একেবারেই বেমানান বলে মনে করেন অনেকেই। আসলে কিন্তু তা নয়।

তবুও একেকজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি একেকরকম হওয়াতেই এতো ঝামেলা। যাদের অল্প বয়সে টাক পড়ে যাচ্ছে তাদের এই নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। দয়া করে ঝেড়ে ফেলুন সকল দুশ্চিন্তা। জেনে নিন টাক মাথাতেও কিভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন তার কিছু টিপস।

(১) যখন দেখবেন মাথায় বেশ ভালো মতোই টাক পড়া শুরু হয়েছে এবং তা থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই, তখন সেভাবেই বাকি চুল না রেখে পুরো মাথা কামিয়ে ফেলুন। পুরো মাথা কামিয়ে ফেললে এবং সেই হিসেবে স্টাইল করলে দেখতে খারাপ দেখাবে না একেবারেই।

(২) মাথা কামিয়ে ফেললে যে আপনার হেয়ার প্রোডাক্ট কেনার ঝামেলা শেষ হয়ে গেলো তা কিন্তু নয়। অনেক ধরনের ময়েসচারাইজিং জেল পাওয়া যায় বাজারে যা আপনার মাথায় লাগাতে পারেন। এতে করে চকচকে একটি ভাব থাকবে যা আকর্ষণীয় হবে। এছাড়াও আরও নানা প্রোডাক্ট পাওয়া যায় যা মাথার ত্বকের ঝামেলা থেকে মুক্তি দেবে আপনাকে। সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

(৩) পুরো মাথা কামিয়ে এর সাথে ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি রাখতে পারেন মুখে। ক্লিন মাথার সাথে ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি অনেক মানিয়ে যায়। এছাড়াও দাড়ি নিয়ে আপনি নিজেই কিছুটা পরীক্ষা চালিয়ে দেখতে পারেন। যেটাতে আপনাকে মানিয়ে যায় সেটাই চেষ্টা করুন।

(৪) খুব বুদ্ধি করে পোশাক নির্বাচন করবেন। যা আপনার সাথে মানিয়ে যায়। যদি তা আপনার বিপরীতেও যায় তাও নিজেকে নিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে পারবেন।

(৫) এর পাশাপাশি লক্ষ্য রাখবেন মাথা যেন ভালো করে ক্লিন থাকে। সপ্তাহে অন্তত একটিবার রেজর দিয়ে নিজে কামিয়ে নিতে পারেন। অথবা সেলুনে চলে যান। এতে করে নিজের লুকটা ধরে রাখতে পারবেন।

Leave a Reply