Wednesday, December 18

ইসলাম

পরকালের হিসাব সম্পর্কে মানুষ উদাসীন

পরকালের হিসাব সম্পর্কে মানুষ উদাসীন

ইসলাম
  মহান আল্লাহ বলেন, মানুষের হিসাবের সময় সন্নিকটে, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ১) তাফসির : এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন, মানুষের কৃতকর্মের হিসাব গ্রহণের সময় অর্থাৎ কিয়ামতের সময় ঘনিয়ে এসেছে। আগের সুরার শেষে আল্লাহ কিয়ামত দিবসের জন্য মানুষের অপেক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন। উল্লিখিত আয়াতে হিসাবের সময় ঘনিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। কারণ দীর্ঘ সময় অবশিষ্ট আছে মনে করে মানুষ আপন গন্তব্যের কথা ভুলে যায়। মূলত জগৎ সৃষ্টির পর যে সময় অতিবাহিত হয়েছে সেই তুলনায় অবশিষ্ট সময় অতি সামান্য। তাই মানুষ যেন দুনিয়ার চাকচিক্যে মোহগ্রস্ত হয়ে উদাসীন হয়ে না পড়ে এবং আল্লাহর প্রেরিত রাসুলের নির্দেশনা পালন করে। কাফিররা ঔদ্ধত্যের সঙ্গে কিয়ামতের প্রতীক্ষার কথা বলত। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তারা কি শুধু এই অপেক্ষায় রয়েছে যে কিয়ামত তাদের কাছে হঠাৎ এসে পড়ুক। বস্তুত কিয়ামতের লক্...
ঈমানের ছয় স্তম্ভ

ঈমানের ছয় স্তম্ভ

ইসলাম
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো— ১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।   তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।   ২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন। ৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় ...
কোন ফেরেশতা কী কাজ করেন

কোন ফেরেশতা কী কাজ করেন

ইসলাম
আল্লাহ ফেরেশতাদের বিভিন্ন দায়িত্বে নিযুক্ত করে রেখেছেন। কোরআন ও হাদিসে তাঁদের কাজের কিছু কিছু বর্ণনাও পাওয়া যায়। এর বাইরেও আল্লাহর অসংখ্য ফেরেশতা এমন আছেন, যাঁদের সংখ্যা ও কাজ মহান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। নিম্নে ফেরেশতাদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি শ্রেণি ও তাঁদের কাজগুলো উল্লেখ করা হলো— ১. জিবরাইল (আ.) : তাঁর কাজ হলো ওহি বা আল্লাহর বাণী নবী-রাসুলদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।   পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, যে ব্যক্তি জিবরাইলের শত্রু এ জন্য যে সে আল্লাহর নির্দেশে তোমার অন্তরে কোরআন পৌঁছিয়ে দিয়েছে, যা তার পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক এবং যা মুমিনদের জন্য পথপ্রদর্শক ও শুভ সংবাদ। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৯৭)   ২. মিকাইল (আ.) : তাঁর কাজ হলো বৃষ্টি বর্ষণ ও উদ্ভিদ উৎপাদন। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) লেখেন, ‘মিকাইল আল্লাহর নৈকট্যশীল ও মর্যাদাবান ফেরেশতাদের একজন। তিনি বৃষ্টি ও উদ্ভিদ...
হারাম উপার্জন দিয়ে ভালো কাজ মূল্যহীন

হারাম উপার্জন দিয়ে ভালো কাজ মূল্যহীন

ইসলাম
  মহান আল্লাহ মানবজাতিকে হালাল উপার্জন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার করো, আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু...’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৮-১৬৯) সুতরাং যেভাবে উপার্জন ও খাবার বৈধ হতে হবে, তেমনি দান করার ক্ষেত্রেও হালাল উপার্জন থেকে দান করতে হবে। কেননা মহান আল্লাহ শুধু পরহেজগার ও নেককারদের পক্ষ থেকে কবুল করেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘...অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিদের পক্ষ থেকে কবুল করেন।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ২৭)   উপার্জিত অর্থ ব্যয় করার ক্ষেত্রে ইসলামের নীতি হলো, প্রথমে নিজের ও নিজের পরিবার-পরিজনের ব্যয়ভার বহন করবে। এরপর কিছু অবশিষ্ট থাকলে দুস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য খরচ করবে। কিন্তু যদি কারো হালাল উপার্জন থেকে নিজের ও পরিবারের জন্য ব্যয় করার পর...
সম্পদ কোথায় ও কিভাবে ব্যয় করব

সম্পদ কোথায় ও কিভাবে ব্যয় করব

ইসলাম
সম্পদ আল্লাহর দান। কাজেই মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নির্দেশিত পথে সম্পদ ব্যয় করা আবশ্যক। নিম্নে সে সংক্রান্ত নীতিমালা উল্লেখ করা হলো— ১.   সম্পদের ওপর ইসলামী শরিয়ত যেসব দায়িত্ব অর্পণ করেছে, সম্পূর্ণ ইখলাসের সঙ্গে তা আদায় করবে। যেমন—জাকাত, ফিতরা, কোরবানি ইত্যাদি। ২.   নিজের ও নিজের পরিবারের ভরণ-পোষণ ও অন্যান্য হক আদায়ের কাজে সম্পদ ব্যয় করবে। ৩.   আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, মেহমান, মুুসাফির, এতিম-মিসকিন, বিধবাসহ নানা শ্রেণির লোকদের প্রয়োজন সাধ্যানুযায়ী পূরণ করবে। ৪.   অপব্যয় করবে না। অর্থাৎ যেসব স্থানে ইসলাম ব্যয় করতে নিষেধ করেছে সেখানে ব্যয় করবে না। কেননা অপব্যয় করা হারাম। আর অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই। ৫.   অমিতব্যয় বা অপচয় করবে না। অর্থাৎ বৈধ স্থানেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত না করা। এটাও ইসলামে নিষিদ্ধ। ৬.   কার্পণ্য করবে না। অর্থাৎ বৈধ স্থানে প্রয়োজনমতো ব্যয় না করা অন্যায়। প্রয়োজন...
নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত দেওয়া

নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত দেওয়া

ইসলাম
কোনো মুসলমানের ঘরে যখন কোনো নবজাতকের আগমন ঘটত তখন সর্বপ্রথম তাকে বংশের কিংবা মহল্লা, গ্রাম ও এলাকার কোনো বুজুর্গের কাছে নেওয়া হতো। তিনি নবজাতকের ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিতেন। মুসলিম পরিবারের এই সংস্কৃতি এখনো সচেতন মুসলিম পরিবারগুলোতে আছে। তবে ধর্ম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান না থাকায় বহু পরিবারের মুরব্বিদের সঙ্গে এই সংস্কৃতিও হারিয়ে যাচ্ছে।   অথচ এটি রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। রাসুল (সা.) নিজেও তাঁর নাতি হাসান (রা.)-এর কানে আজান দিয়েছিলেন। উবাইদুল্লাহ ইবনে আবু রাফি (রা.) বলেন, ফাতিমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তার কানে নামাজের আজানের ন্যায় আজান দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১০৫) শুআবুল ঈমানের বর্ণনায় আছে, ফাতিমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তার ডান কানে নামাজের আজানের ন্...
বেশি কথা বলার পরিণতি

বেশি কথা বলার পরিণতি

ইসলাম
যার কথা বেশি তার বিপদ বেশি। বিনা প্রয়োজনে কথা বলা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা পরিহার করা মুমিনের কর্তব্য। কেননা এটা আল্লাহর অসন্তোষের কারণ।   রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর মাতাদের অবাধ্যতা, কন্যাদের জীবন্ত প্রোথিতকরণ, কৃপণতা ও ভিক্ষাবৃত্তি হারাম করেছেন। আর তোমাদের জন্য বৃথা তর্ক-বিতর্ক, অধিক জিজ্ঞাসাবাদ ও সম্পদ বিনষ্টকরণ মাকরুহ করেছেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৪৭৭)   প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বললে বেশি ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ভুল মানুষের জন্য মন্দ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দা কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টির কোনো কথা বলে অথচ সে কথা সম্পর্কে তার জ্ঞান নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবার বান্দা কখনো আল্লাহর অসন্তুষ্টির কথা বলে ফেলে যার পরিণতি সম্পর্কে তার ধারণা নেই, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্না...
ফেরেশতাদের মধ্যে যাঁরা আল্লাহর বেশি নৈকট্যবান

ফেরেশতাদের মধ্যে যাঁরা আল্লাহর বেশি নৈকট্যবান

ইসলাম
  ফেরেশতারা আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি। আল্লাহ তাঁদের বিশেষ ক্ষমতা ও দায়িত্ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা সবাই আল্লাহর অনুগত। তবে ফেরেশতাদের মধ্যে কতিপয় ফেরেশতাকে আল্লাহ বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। কোরআন ও হাদিসের আলোকে তাঁদের পরিচয় তুলে ধরা হলো।   সব ফেরেশতা সম্মানিত : আল্লাহর সব ফেরেশতা সম্মানিত। কেননা তাঁরা সবাই আল্লাহ আনুগত্য ও ইবাদতে মগ্ন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আকাশমণ্ডলী ঊর্ধ্বদেশ থেকে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর জগদ্বাসীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। জেনে রাখো, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ৫) কিছু ফেরেশতা অধিক নিকটবর্তী : আল্লাহর সব ফেরেশতা আল্লাহর অবাধ্যতা ও দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। সুতরাং তাঁদের সবাই আল্লাহর নিকটবর্তী বান্দা। তবে তাঁদের মধ্যে কতিপয় ফেরেশতা বিশেষ মর্যাদার...
ভালো কাজে গোটা জীবনের পাপমোচন!

ভালো কাজে গোটা জীবনের পাপমোচন!

ইসলাম
  মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো, সৎকর্ম করা। যে মুমিন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একনিষ্ঠভাবে সৎকর্ম করবে, মহান আল্লাহ তাকে হায়াতে তাইয়্যেবাহ দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি মুমিন থাকা অবস্থায় সৎকর্ম করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, আমি অবশ্যই তাকে উত্তম জীবন-যাপন করাব এবং তাদেরকে তাদের উত্কৃষ্ট কর্ম অনুযায়ী প্রতিদান অবশ্যই প্রদান করব। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৭) এ জন্য মুমিনের উচিত, সুযোগ পেলেই সৎকর্ম করার চেষ্টা করা। বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, ‘ভালো কোনো কিছু দান করাকে হীন মনে করে না, এমনকি হোক সেটা ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৮৪)   তাই ছোট হোক বা বড়, সৎকর্মের সুযোগ হলে তা কখনোই হাতছাড়া না করা। মানুষের ছোট একটি সৎকর্মও যদি মহান আল্লাহর কাছে পছন্দ হয়, তবে এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ বান্দার গোটা জীব...
ইসলামে আয়-ব্যয় নীতি

ইসলামে আয়-ব্যয় নীতি

ইসলাম
  পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। সুন্দরভাবে জীবন পরিচালনার জন্য অর্থের জোগান দিতে হবে। সে জন্য আল্লাহ তাআলাও রিজিক অনুসন্ধানের জন্য আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর নামাজ শেষ হয়ে গেলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো এবং বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।(সুরা : জুমুআহ, আয়াত : ১০)   জীবিকা অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ইসলাম কাউকে লাগামহীন স্বাধীনতা প্রদান করেনি। সম্পদ উপার্জন এবং তার ব্যয় করা বিভিন্ন নীতিমালার ছাঁচে আবদ্ধ করে দিয়েছেন। মানুষ যখন এসব নীতিমালা মেনে জীবনযাপন করবে তখনই মানবজীবনে আসবে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা ও সচ্ছলতা। আর যদি তা না মেনে যাচ্ছে-তাই করা হয়, তাহলে নানা বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক ধ্বংস নেমে আসবে। হালাল উপার্জন : উপার্জনের জন্য প্রধান শর্ত হচ্ছে তা বৈধ পন্থায় উপার্জন করা। সুতরাং অবৈধ পন্...