Friday, April 19

বাজারে সবজি ও ডিমের দর বাড়তি, হিমশিমে নিম্নবিত্তরা

বাজারে সবজির দাম বেশি চড়া। তার সঙ্গে বাড়তি ডিমের দামও। ফলে নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষদের জীবিকা নির্বাহে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মূলত দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর সবজি বাজারে। বড় বাজারের তুলনায় ছোট বাজারে দাম বেশি বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, যেসব এলাকায় সবজি চাষ হয়, সেসব এলাকায় বন্যার কারণে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বাজারে সবজির দাম বাড়তি।
ক্রেতারা বলছেন, বন্যার দোহাই দিয়ে সবজির দাম বাড়িয়ে তুলছে বিক্রেতারা। ফলে জীবন বাঁচাতে যতটুকু বাজার করা দরকার ততটুকুই করছেন বেশির ভাগ মানুষ।

আজ শুক্রবার রাজধানীর কাঁঠালবাগান, কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজারে গিয়ে বর্ষার হরেক রকম সবজি দেখা যায়। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষায় কাঁকরোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, পটোল, ঢ্যাঁড়স, কচু মুখি, কচুর লতি, চালকুমড়া পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের খুচরা বাজার, হাতিরপুল ও কাঁঠালবাগান বাজারে ঝিঙা ও ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, আর পটল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ও করলার কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাঁকরোল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা, শসা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুর লতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, কচুর ছড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
এছাড়া মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রতি কেজি প্রকার ভেদে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. কামরুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বাজারে মাল কম আহে, বন্যায় খেত ডুইবা গেছে। সরবরাহ বাড়লে না দাম কমব।
নিয়মিত কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা করেন সিয়াম হাসান। তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সবজির দাম এতই বেশি যে ৫০ টাকার নিচে কোনও সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই বেশি দাম দিয়ে কিনছি। সবজির পাশাপাশি বেড়েছে পেঁয়াজ, মরিচ, ধনেপাতা ও শাকের দামও।
কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা রাফিয়া সুলতানা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ঈদের পর সবজির দাম সহনীয় ছিল। প্রায় সব সবজিই ৪০ টাকার মধ্যে ছিল। যেই মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করল, অমনি সবজির দামও দফায় দফায় বাড়তে থাকল।
হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা হাসান মিয়া আরটিভি অনলাইনকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে সবজি ঠিকমতো পাওয়া যায়নি। এছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় পানি জমার কারণেও সবজির দাম বেড়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে সবজির দাম আবার কমে যাবে।
আরেক ক্রেতা শাহবাগ সরকারি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সুজন বিশ্বাস আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বর্ষার সবজি বাজারে আছে, তবে দাম কিছুটা বেশি। বিক্রেতারা তো বলছেন বন্যার কারণে দাম বেশি। তবে বন্যা কমে গেলে তারা অন্য অজুহাতে আবার দাম বেশি রাখেন। দাম কমে না, বাড়তেই থাকে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ডিমও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। ডিম ভেদে প্রতি ডজনের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন ৯৫ টাকায়, দেশি মুরগির ডিম ১৪০ টাকা এবং হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
মাছ ও মাংসের দাম বেশ চড়া। প্রতিকেজি মাংসে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর মাছ ভেদে বেড়েছে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এ বাজারে গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫২০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, মুরগি ব্রয়লার ১৬০ টাকা, লেয়ার ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি রুই ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাস ১৪০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Leave a Reply