ওভার-দ্য-টপ ছবিগুলো থেকে নিস্তার নিয়ে ‘রইস’, ‘ডিয়ার জিন্দেগি’ কিংবা আনন্দ এল রাই, ইমতিয়াজ আলির মতো পরিচালকদের সঙ্গে ছবি করছেন শাহরুখ খান। কারণ, লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্র করতে করতে খানিকটা একঘেয়েমি এসে গিয়েছে তাঁর। শাহরুখের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় ছিল মোটে ১০ মিনিট।
ছবিতে তাঁর সংলাপ ‘ধন্দে সে বড়া কোই ধর্ম নেহি হোতা’। বাস্তবেও তিনি সেটাই মানেন। অভিনয়টাই তাঁর কাছে ধর্ম। দর্শকের প্রত্যাশার মাত্রা বুঝলেও নিজের অভিনয়-সত্তাটাকে এবার একটু খুঁড়তে চান। তাই ওভার-দ্য-টপ ছবিগুলো থেকে নিস্তার নিয়ে ‘রইস’, ‘ডিয়ার জিন্দেগি’ কিংবা আনন্দ এল রাই, ইমতিয়াজ আলির মতো পরিচালকদের সঙ্গে ছবি করছেন শাহরুখ খান। কারণ, লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্র করতে করতে খানিকটা একঘেয়েমি এসে গিয়েছে তাঁর। শাহরুখের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় ছিল মোটে ১০ মিনিট।
কিন্তু কে না জানে, শাহরুখ মানেই অনর্গল…
হালফিলে আপনাকে যে ধরনের চরিত্রগুলোয় দেখা গিয়েছে, ‘রইস’ তো তার চেয়ে একেবারেই আলাদা। ছবিটা করতে রাজি হলেন কেন?
আমার কাছে যখন প্রস্তাবটা আসে তখন আমি ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’এর কাজটা সবে শেষ করেছি। ওটা একেবারেই হ্যাপি-গো-লাকি গোছের ছবি। এই ধরনের ওভার দ্য টপ ছবি দর্শক ছুটির সময় উপভোগ করেন।
নিজেই বলছেন, ছবিটা ওভার দ্য টপ!
হ্যাঁ। এতে তো লুকোছাপার কিছু নেই। এই ছবিগুলো অনেকটাই চ়়ড়া দাগের। যেখানে এইট প্যাক্স হলেই চলে যায়, সেখানে টেন প্যাক্স থাকে (হাসি)! আমি খানিকটা বাস্তবধর্মী কিছু করতে চাইছিলাম। ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’এর আগে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ করেছি। সেটাও ওই একই গোত্রের। ভেতরের অভিনেতা-সত্তা অন্য রকম কিছু করতে চাইছিল। রাহুলের (ঢোলাকিয়া, পরিচালক) ছবিটা অনেকটা সেরকমই। একটু নিশ। রাহুল কিন্তু আঁতলামো করতে চায়নি। সারবত্তা আছে এমন একটা বিষয়কে পপুলার দৃষ্টিভঙ্গিতে বানাতে চেয়েছে। সেই কারণে ছবিতে আমার আগমন। আই অ্যাম মোর অফ অ্যান আরবান স্টার। গল্পটার সঙ্গে আমি খাপ খাইয়ে নিতে পারছিলাম।
আপনাকে কোনওদিন ‘নিশ’ ছবিতে দেখা গেল না…!
জানি। এটা আমারও মনে হয়। এমনকী, ঠিক এখনই মনে হচ্ছিল। কোনওদিনই নিশ, অফবিট বলতে যে ধরনের ছবিগুলোর কথা বলা হয়, সেগুলোয় অভিনয় করিনি। হয় সেই বিষয়গুলো আমি বুঝি না, নয়তো কেউ আমাকে প্রস্তাব দিতে ভরসা পান না! ‘রইস’ যে একেবারে আমার জঁরের ছবি তা কিন্তু নয়। আসলে গল্পটা খুব ভাল করে লেখা। একটা ছেলে বড় হয়ে ডন হল আর
মারপিট করে বেড়ালো গোছের নয় বিষয়টা। একটা চরিত্রের সাত-আট বছর বয়স থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত জার্নির গল্প ‘রইস’।
কোনও ছবি সই করার আগে কোন জিনিসগুলো মাথায় রাখেন?
আমি এখন যে জায়গায় আছি, সেখানে প্রত্যাশার চাপটা মারাত্মক। যে প্রত্যাশাগুলো পূরণ করাই হয়তো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। খুব কম প্রতিভা নিয়েই হয়তো আমি এত বড় স্টার হয়েছি। অন্তত ২৫ বছর ধরে যে ভালবাসা পাচ্ছি, তাতে সেটাই মনে হচ্ছে। আমার কাছ থেকে সকলে যা চাইছেন, সেটা হয়তো আমি দিতে পারব না। ‘ফ্যান’ হয়তো অনেক মেয়ের ভাল লাগেনি। তারা আমার কাছ থেকে রোমান্টিক সং প্রত্যাশা করে।
‘ডিয়ার জিন্দেগি’তে তারা হয়তো ভেবেছিল আমার আর আলিয়ার প্রেমটা হবে। ২৫ বছরের কেরিয়ারে বুঝেছি, সকলকে খুশি করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। নিজের অভিনেতা-সত্তাটার জন্যও আমার কিছু কর্তব্য আছে।
‘রইস’এ তো অনেক অ্যাকশন সিকোয়েন্স রয়েছে।
হ্যাঁ। ‘ফ্যান’এর শ্যুটিংয়ের সময় মারাত্মক চোট পেয়েছিলাম। হাঁটুর চোটটা অনেকদিনের। আমার প্যাটেলা ভেঙে গিয়েছিল। এই চোটগুলোর জন্যই ‘রইস’এর শ্যুটিংয়ে দেরি হল। অনেক চেজ সিকোয়েন্স নিজে শ্যুট করতে পারিনি। লংশটগুলোয় বডি ডাব্ল ব্যবহার করেছি। সচরাচর যেটা করতে চাই না। এক্ষেত্রে কিছু করার ছিল না। নয়তো আরও দেরি হতো। মাংসের ফ্যাক্টরির ভিতরে একটা ফাইট সিকোয়েন্স আছে। আমার সার্জারির পরে সেই দৃশ্যটা নেওয়া হয়েছিল। মেঝেতে ম্যাট্রেস পাতা হয়েছিল আমার জন্য। এইভাবে কাজ সারতে হয়েছে।
‘রইস’ আর ‘কাবিল’এর টক্করটা এড়ানো গেলে তো ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে ভাল হতো!