ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভিসামুক্ত ব্যবস্থা চালু করার পক্ষে বাংলাদেশ। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী নয়াদিল্লিতে এক সম্মেলনে বলেছেন, আমরা ধীরে ধীরে এমন এক ব্যবস্থা চালু করতে চাই যখন দুই দেশের মানুষ, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েই একে অন্যের দেশে যাতায়াত করতে পারবে। প্রয়োজন হবে না ভিসার। তিনি বলেছেন, হাজার হাজার বছর ধরে যুদ্ধের পরে ইউরোপ যদি এই ব্যবস্থা চালু করতে পারে তবে দক্ষিণ এশিয়াতেও তা সম্ভব। দুই দেশকে ‘সিয়ামিজ টুইন’ (জোড়া যমজ) হিসেবে আখ্যায়িত করে হাইকমিশনার বলেছেন, বাংলাদেশ সহযোগিতামূলক ভিসা ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, ভারত থেকে বেশি বেশি করে মানুষ বাংলাদেশে যাচ্ছেন। ভিসার জন্য আবেদন ক্রমশ বাড়ছে। ভিসা দেবার ব্যাপারে বাংলাদেশ মিশনগুলি সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করছে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ভারতের ৬৫ বছরের বেশি বয়সের প্রবীন নাগরিকরা যাতে বাংলাদেশে তাদের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন সেজন্য ৫ বছর মেয়াদী ভিসা দেবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে একসময় আমরা এমন ব্যবস্থা চালু করতে চাই যেখানে ভিসামুক্ত ভাবেই দুই দেশের নাগরিকরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে একে অন্যের দেশে সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। বহুমুখী সহযোগিতা শীর্ষক ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আরও বলেছেন, খোলা মনে আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই ৬৮টি বছরের পুরনো সীমান্ত সমস্যার সমাধান করেছি। এখন আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগও মানুষে মানুষে সংযোগ বাড়ানোর কাজ করতে হবে। তার মতে, সড়ক, রেল, জলপথ ও আকাশ পথে যোগাযোগ যত বাড়বে ততই ব্যবসা বাণিজ্যের বৃদ্ধি ঘটবে।
এদিকে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ভারতের বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পাট ও পোষাক খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো খুবই জরুরি। সেইসঙ্গে তিনি বিশ্ব বাজারের দিকে লক্ষ্য রেখে ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বস্ত্র ক্ষেত্রে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। পোষাক ক্ষেত্রে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা হাত মেলাতে পারেন। জামদানি নিয়ে তিনি বলেন, ভারতের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জামদানি যেখানে তৈরি হয় সেখানে যেতে পারেন তেমনি বাংলাদেশের জামদানি ব্যবসায়ীরা ভারতে আসতে পারেন বাজারের সন্ধানে। এইভাবে যোগাযোগ বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বস্ত্রমন্ত্রী।