
কর্মস্থল দ্বিনের দাওয়াতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। কর্মস্থল এমন একটি জায়গা, যেখানে বহু মানুষের সমাগম হয়। বহু গোত্র ও সংস্কৃতির মানুষ কর্মের কারণে এক জায়গায় জড়ো হয়। দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার কারণে তাদের পরস্পরের মধ্যে গড়ে ওঠে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।
তারা এক পরিবারের মতো মিলেমিশে বসবাস করে। একের আনন্দে যেমন আনন্দিত হয় সবাই, তেমনি একজনের ব্যথায়ও ব্যথিত হয়। আনন্দ ও কষ্ট ভাগাভাগি করে এগিয়ে চলে তাদের জীবনতরি। নুমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, এক মুমিন অন্য মুমিনের জন্য প্রাসাদস্বরূপ, যার এক অংশ অন্য অংশকে সুদৃঢ় রাখে। অতঃপর তিনি তাঁর এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের মধ্যে প্রবেশ করান। (বুখারি, হাদিস : ৬০২৬)
সুতরাং কর্মস্থলের এই সুন্দর পরিবেশ ও সুযোগকে কাজে লাগানো যায় দাওয়াতের মাধ্যমে। সহকর্মীদের আখিরাতমুখী করা ঈমানি দায়িত্ব। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার পক্ষ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছে দাও। (বুখারি, হাদিস : ৩৪৬১)
প্রতিটি বিভাগেই ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি তাঁর অধীনদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। রাসুল (সা.) বলেন, সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে…। (মুসলিম, হাদিস : ১৮২৯)
আর এই দায়িত্বশীলতার কারণে তার জবাবদিহিও বেশি। বিষয়টি যেমন দুনিয়াবি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি ধর্মীয় ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কেননা অধীনদের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া ঊর্ধ্বতন ব্যক্তির দায়িত্ব। দ্বিনি কর্মের সুযোগ না দিয়ে কর্মচারীদের কাছ থেকে শুধু দুনিয়াবি ফায়দা হাসিল করা মোটেই সমীচীন নয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, দ্বিন হলো নসিহত তথা উপদেশ। (সহিহ মুসলিম)
কর্মস্থলে দাওয়াত দিয়ে ইসলামের সুমহান আদর্শ তুলে ধরা যায় সহজে। যেমন—কাউকে শিরক কিংবা বিদআত করতে দেখলে বা কোনো ফরজ কাজে গাফিলতি দেখলে তাকে বলবে, শিরক বর্জন করো। কেননা শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় জুলুম। তাওবা ছাড়া যা আল্লাহ ক্ষমা করেন না। অনুরূপভাবে বিদআত হচ্ছে শরিয়তে নতুন সৃষ্টি, যা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরূপভাবে কাউকে কোনো অন্যায় করতে দেখলে বলবে, হে ভাই! আল্লাহকে ভয় করো! অন্যায় থেকে বিরত হও।
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।