Friday, November 8

এই একটি কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতা ম্যাচ হেরে গেলো বাংলাদেশ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল পর্ব শুরুর আগে, বাংলাদেশ প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ- পাকিস্তান। আজ প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে বার্মিংহ্যামের এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছে সাকিব-তামিমরা।

টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ৩৪২ রানের টার্গেট দিয়ে পাকিস্তানকে চাপে রাখে বাংলাদেশের বোলাররা।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হল না। একটি কারণে জেতা ম্যাচ হেরে গেলো বাংলাদেশ। কারণটি হলো টাইগার বোলাদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগের এই প্রস্তুতি ম্যাচে ৪০ ওভারে সরফরাজ আহমেদের দলের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৩৩ রান। জিততে হলে বাকি ১০ ওভারে তাদের করতে হবে আরো ১০৯ রান। ওভার প্রতি তুলতে হবে ১০.৯০ রান। শেষ ৫ ওভারে তারা প্রায় ৭ গড়ে রান তুলতে পেরেছে । পুরো ম্যাচে এর বেশি রান তোলার ধারাবাহিকতা নেই। এর মধ্যে ৩৯তম ওভারে ৭২ রান করা অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক ফিরিয়ে দিয়ে জয়ের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল করে তুলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্রিজে আছেন ইমাদ ওয়াসিম (৩৮) ও শাদাব খান (১)।

তামিম ইকবাল খেলেছেন ১০২ রানের ইনিংস। ইমরুল কায়েস করেছেন ৬১। মুশফিকুর রহীমের ব্যাট থেকে আসে দ্রুতগতির ৪৬। আরো কয়েকটি ছোটো-মাঝারি ইনিংসে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ৩৪১ রান তোলে বাংলাদেশ দল। টস জিতেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর তাসকিন আহমেদ ও মাশরাফি

মিলে শুরুতে পর পর দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে চাপে ফেলেন পাকিস্তানকে। সেটি সামলে উঠলেও কখনোই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা জেতার জন্য প্রয়োজনীয় ওভার প্রতি রানের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটতে পারেননি।

ম্যাচটা প্রস্তুতিমূলক বলেই সব পেসারকে পরখ করে দেখার সুযোগ মিলেছে। নতুন বলে তাই তরুণ তাসকিন হয়েছেন মাশরাফির পার্টনার। চতুর্থ ওভারে প্রথম আঘাতটা গেলো দুই ম্যাচ মিস করা যুবা ফাস্ট বোলার তাসকিনের। আজহার আলিকে (৮) ফিরেয়েছেন তিনি। পরের ওভারেই আরো বড় আঘাত হেনেছেন মাশরাফি। এই সময়ের সেনসেশন বাবর আযমকে (১) কিছু করার আগেই ড্রেসিং রুমে পাঠিয়েছেন মাশরাফি। ১৯ রানে দুই উইকেট হারানো পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্য টাইগার বোলাররা হয়েছেন আরো উজ্জীবিত।

ধাক্কা সামলানোর কাজটা বেশ ভালোভাবে এরপর করেছেন আহমেদ শেহজাদ ও হাফিজ। তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েছেন তারা। পাকিস্তানের ৭৮ রানের সময় সাকিব আল হাসান ফিরিয়ে দেন ৪০ বলে ৪৪ রান করে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা শেহজাদকে। তারপর কিছুটা হতাশা বাসা বাঁধে বাংলাদেশের বোলারদের মাঝে। মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিক মিলে ১২.৩ ওভার ব্যাট করেছেন। চতুর্থ উইকেটে ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৯ রানের জুটি হয়েছে। হাফিজকে ৪৯ রানে বিদায় করে স্বস্তি আনেন শফিউল ইসলাম। এরপর অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে (৫) থিতু হতে দেননি মোসাদ্দেক হোসেন। শোয়েব মালিক হুমকি হয়ে ছিলেন। কিন্তু সেটিও উপড়ে ফেলেছে টাইগাররা।

এর আগে বার্মিংহাম দেখেছে তামিম ইকবাল শো। মাশরাফি টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন। সৌম্য সরকার ১৯ রান করে দলীয় ২৭ রানের সময় বিদায় নেন। কিন্তু তামিম ৩৯ বলেই ফিফটি করে ফেলেন। জুনায়েদ খানের এক ওভারে মারেন তিনটি চার ও একটি ছক্কা। এরপর মারার দায়িত্ব নেন ইমরুল কায়েস। ৬২ বলে ৬১ রান করে বিদায় নেন তিনি। ১৪২ রানের জুটি গড়েছেন তামিমের সাথে, দ্বিতীয় উইকেটে। ইনফর্ম মুশফিকুর রহীম এসে চার্জ করেন। তাতে উদ্দিপ্ত হয়ে পর পর দুই ওভারে দুই স্পিনারকে দুই ছক্কা হাঁকান তামিম। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ৮৮ বলের সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৯৩ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ১০২ রান করে ফেরেন তামিম।

ততক্ষণে তামিম-ইমরুলের ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথ দেখেছে টাইগার দল। ইংল্যান্ডে মাত্র দুদিন আগে এসেছে তারা আয়ারল্যান্ড থেকে। কিন্তু এই কন্ডিশনে তাদের অপরিচিত লাগেনি। শেষ ম্যাচে যার ব্যাটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ, বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে উঠে এসেছে সেই মুশফিক ৩৫ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৪৬ রান দিয়ে গেলেন। সাকিব আল হাসান ২৩, মাহমুদউল্লাহ ২৯, মোসাদ্দেক হোসেন ২৬ রান করেছেন। মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ রান। শেষ ৭ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও পেয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রান। ওয়ানডে আন্তর্জাতিকে এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি ৩২৯। সেটি ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে পাকিস্তানকে ৩ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা সিরিজে।

Leave a Reply