Sunday, April 21

অভাব মেটাতে পিএইচডি’র ছাত্রী আজ এই অবস্থায় … বিস্তারিত দেখলে আপ্নিও অবাক হবেন

অভাব মেটাতে পিএইচডি’র- মহারাষ্ট্রের মেয়ে স্নেহা। খুবই মেধাবী, আর পড়ালেখায় তুখোড়। তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পিএইচডি শেষ করে জার্মানী চলে যাবে। কিন্তু এই স্বপ্ন দেখার ফাঁকেই তার জীবনে আসে একটা বিশাল ঝড়।

স্নেহা ভালোবাসত ঝাড়খন্ডের ছেলে প্রেমশঙ্করকে। অরকুটে তাদের প্রথম পরিচয়। সেখান থেকে দুজনের মাঝে প্রেমের শুরু, আর তারপর ছয় বছর আগে তারা নিজ নিজ পরিবারের অমতেই বিয়ে করে ফেলে। তাদের এই কাজে দুই পরিবারই খুবই নাখোশ হয়, এবং আত্মীয়স্বজনদের সাথে যোগাযোগ মোটামুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

কেরালা ইউনিভার্সিটিতে ডক্টরাল রিসার্চের ফেলোশিপ পাওয়ার পর তারা দুজন চলে আসে কেরালায়। কিন্তু বৃত্তির যে অতি সামান্য পরিমাণ টাকা স্নেহা পেত, তা দিয়ে একদন অজানা অপরিচিত নতুন একটি শহরে টিকে থাকা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছিল তাদের জন্য।

পরিবারের থেকে যে কিছু আর্থিক সাহায্য নেবে, সেই রাস্তাও ছিল পুরোপুরি বন্ধ। সবমিলিয়ে তাদের অবস্থা যখন একেবারেই শোচনীয়, ঠিক তখনই দারুণ একটি বুদ্ধি খেলে যায় সোশ্যাল ওয়ার্কে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করা প্রেমের মাথায়।

বরাবরই রান্নাবান্নার ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ ও ভালো লাগা ছিল প্রেমের। এবার সে ঠিক করল সেই ভালো লাগার কাজের মাধ্যমেই বাড়তি কিছু উপার্জনের ব্যবস্থা করবে।

তাই নিজেদের দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে অবসর সময়ে রান্না করে বিক্রি করতে শুরু করল তারা। কেরালার আরিয়াভাত্তমে প্রচুর আইটি ফার্ম। এই সেক্টরের মানুষজনের নিত্য আনাগোনা সেখানে। আর ঠিক সেই জায়গাটিরই ঠিক কেন্দ্রস্থলে দেখতে পাওয়া যায় একটি খাবারের কার্ট।

প্রেম ও স্নেহার সেই খাবারের কার্টে পাওয়া যায় লোভনীয় আলু পরোটা ও ততোধিক সুস্বাদু চাটনি। তাদের এই বিশেষ দুইটি আইটেম এতটাই জনপ্রিয় যে ওই এলাকায় কেউ যদি স্রেফ ঘুরতেও আসে, একবার অবশ্যই আইটেম দুইটি চেখে যায়।

আর তাই তাদের ব্যবসাও খুবই রমরমা। এই খাবারের কার্ট থেকে হওয়া আয়ে তারা যে শুধু দৈনন্দিন প্রয়োজনই মেটাতে পারছে তা নয়, পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্যও সঞ্চয় করতে পারছে।

স্নেহার স্বপ্ন, জার্মানিতে গিয়ে একজন বিজ্ঞানী হওয়া। আর প্রেমের বর্তমান সকল লক্ষ্য রান্নাকে কেন্দ্র করেই। সে ঠিক করেছে, গত কয়েক বছরে যে অভিজ্ঞতা সে অর্জন করেছে, সেগুলো কাজে লাগিয়ে জার্মানিতে গিয়ে নিজের একটি পূর্নাঙ্গ রেস্টুরেন্ট খুলবে সে।

সবমিলিয়ে স্নেহা ও প্রেম জীবনসংগ্রামে এখন পর্যন্ত সফল দুজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষই শুধু নয়, তারা অন্যান্য প্রেমিক-প্রেমিকাদের দৃষ্টিতে একটি আদর্শ জুটিও বটে।

অন্য আরও অনেকেই যেখানে পরিবারের চাপে কিংবা ক্যারিয়ার গড়ার কারণে ভালোবাসাকে জলাঞ্জলি দিতেও কার্পণ্য করে না, সেখানে তারা দুজন ঠিকই তাদের ভালোবাসায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।

এবং প্রতিকূল স্রোতের মাঝে টিকে থাকার মত ব্যবস্থাও তারা করতে পেরেছে, যা অনেকের কাছেই একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Leave a Reply