Friday, March 29

আমি আর আমার মামী শুয়ে আছি, হঠাৎ দেখি বাবা এসে মামীর যা….

আমি আর আমার মামী- আমি কথাগুলো ঠিক কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছি না। আমার জন্মের পর থেকে দেখে আসছি মা আর বাবার ঝগড়া আর মারামারি। বাবা মায়ের ঝগড়ার কারণে তখন থেকেই আমার মেজাজ খুব খিটখিটে হয়ে যায়।

বাবার খুব খারাপ কাজে হাত আছে, যা দেখার পর আমার মনের অবস্থা আকাশ দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার মতন হয়। আমি তখন ক্লাস ৫/৬ এ পড়ি। আমি আর আমার মামী শুয়ে আছি। হঠাৎ দেখি বাবা এসে মামীকে জড়িয়ে ধরছে।

ঐ রাতে আমার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছিলো আর মনে হচ্ছিল রাত যেন শেষই হয় না।কয়েক বছর পর আমার ছোট ভাই এক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সে চলে যাওয়ার পর আমি খুব একা হয়ে গিয়েছিলাম, ধীরে ধীরে জানতে পারি আমি নাকি তাদের আসল সন্তান না।

এটা জানার পর আমি আরো ভেঙ্গে পড়ি। এসএসসি দেওয়ার পর আমি নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করি কিন্তু বার বার হেরে যেতে থাকি। ওদিকে মা বাবার ঝগড়া আরো বাড়তে থাকে।

আমাদের ঘরে যত কাজের লোক রাখা হত সবার সাথে বাবা মানে ওই জানোয়ারটা দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করত। এইচএসসি’র আগে আমি ঘর থেকে বের হয়ে যাই কিন্তু মা কান্নাকাটি শুরু করলে আবার ফিরে আসি।

আমি এই নরক থেকে বাঁচতে চাই। আমার পরীক্ষা চলাকালীন সময় মা ছোটেবেলায় আমাকে যেভাবে এনেছিলো সেভাবে আরেকটি শিশুকে দত্তক আনে। আমি বুঝে পাই না, যেখানে আমাদের পরিবার ঠিক নেই সেখানে এই নিষ্পাপ বাচ্চাটিকে কেন তিনি এনেছেন।

বাচ্চাটার প্রতি এখন মায়া জমে গেছে। কিছুদিন আগেও আমরা বাইরে গিয়েছিলাম। এসে শুনি আমাদের কাজের ছেলেকে ঐ জানোয়ারটা শারীরিকভাবে ব্যবহার করেছে।

শুনে, আমি চিৎকার করে ছোটবেলায় দেখা জঘন্য কাজের কথাগুলো বলি। আমার মা আমাকে অবাক করে দিয়ে বলেন, সে আমাদের আরো অনেক নারী আত্মীয়র সঙ্গেই এমনটা করেছে।

তার টাকা আছে বলে সবার মুখ বন্ধ করে রাখে। যদিও পরে সব ই জানাজানি হয়। আমি একটা রাত ও ঘুমাতে পারিনা। কাঁদতে কাঁদতে এখন চোখের জল ও শুকিয়ে গেছে। মায়ের অবস্থাও ভালোনা।

দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। আমি বারবার বলেছি ঘর থেকে বের হয়ে যাই কিন্তু মা রাজী হচ্ছেন না। মা একটি হাসপাতালের নার্স। চলার মত যথেষ্ট টাকাও আছে। তবুও তিনি এখানেই আছেন।

আমি এই নরক থেকে মুক্তি চাই। ছোট ভাইটাকে শিক্ষিত করতে চাই। এই বাচ্চাটিকে এই নরকে রেখে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার করতে চাইনা। আমি কী করবো এখন?”

পরামর্শঃ
আপু। খুব কষ্ট লাগল তোমার চিঠিটি পড়ে। তুমি লেখোনি যে এই মুহূর্তে কীসে পরছ বা কী করছ। সেটা বললে উত্তর দিতে সুবিধা হতো আমার।

যাই হোক আপু, প্রথম কথা হচ্ছে তুমি নিজে খুব সাবধান থাকো। সবচাইতে ভালো হয় হলে বা হোস্টেলে চলে গেলে। যে লোক কাজের ছেলেকেও রেপ করতে পারে, তার জন্য তোমাকে রেপ করা কোন বিষয় না।

এই মুহূর্তে সেই বাড়িতে তুমিই সবচাইতে রিস্কে আছো। তাই সবার আগে নিজেকে নিরাপদ করার চেষ্টা করো। আর যেভাবেই হোক আপু, স্বনির্ভর হয়ে উঠতে চেষ্টা করো। লেখাপড়া শেষ না হয়ে থাকলে পার্ট টাইম জব বা টিউশনি করতে পার।

দ্বিতীয়ত, মাকে খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে বলো যে কেন তোমাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে। জানোয়ারটা যে তোমার দিকেও হাত বাড়াতে পারে, সেটা তাকে বুঝিয়ে বল। তোমরা চলে যাওয়ার পর লোকটা কোন ঝামেলা করলে যে আইনি সহায়তা নেয়া যাবে, সেটাও বুঝিয়ে বলো মাকে।

তারপরও মা যদি রাজি না হন, নিজে আলাদা হয়ে যাও। আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হয়ে ওঠো। একবার নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গেলে তখন নিজের ভাই, এমনকি মায়েরও দায়িত্বও নিতে পারবে।

Leave a Reply