Friday, April 26

মনের হতাশা গুলো প্রকাশ করে চোখের জল ফেলছিলেন শিশু শামিম হোসেন…পড়ুন বিস্তারিত-

কেউ বসতে চায় না – ‘কেউ আমার সাথে খেলতে চায় না, স্কুলেও আমার কাছে কেউ বসতে চায় না’ আমি ভাল হতে চাই এবং সুস্থ হয়ে আবার স্কুলে যেতে চাই। এভাবেই মনের হতাশা গুলো প্রকাশ করে চোখের জল ফেলছিলেন শিশু শামিম হোসেন (১০)।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের সোহাগবাড়ি গ্রামে শামিমের বাড়ি। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে বড়। বাবা আফসুর হোসেন পেশায় দিনমজুর। মা সাবেদান নেছা গৃহিনী। ছোট্ট একটি ভাঙাচোরা ঘর নিয়ে তাঁদের সংসার। জমি-জমা সম্পদ কিছুই নেই। দিন এনে দিন খেয়ে চলে পরিবারটি। ফলে সন্তানের চিকিৎসার সাধ্য হয়নি তাদের।

শামিম হোসেন স্থানীয় সোহাগবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে। জন্মের সময় কপালের কোনে একটি কালো তিলক ছিল। দিনে দিনে সেটি বড় হয়ে বিশাল আকার ধারণ করেছে। ভেতরে ক্ষত তৈরি হয়ে চুলকানিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ছেলেটি। নষ্ট হতে বসেছে একটি চোখ। চিকিৎসকরা অস্ত্রপাচারের পরামর্শ দিলেও দিনমজুর বাবা সে অর্থ যোগার করতে পারেনি। ফলে কষ্ট যন্ত্রনায় ছটফট করছে শিশু ছেলেটি।

সম্প্রতি শামিমদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় বসে শামিম। চুলকানি আর যন্ত্রনায় চোখ ভিজে পানি পরছে। কালো আকৃতির তিলকটি এখন বেশ বড় । মুখমন্ডলের একপাশ দিয়ে কান পর্যন্ত ঝুলে পড়েছে তিলকটি। এতে বন্ধ হয়ে গেছে একটি চোখ। নিচের অংশে ক্ষত তৈরি হয়ে পূঁজ পড়ছে।

শামিমের মা সাবেদান নেছা জানান, জন্মের পর শামিমের কপালের ডান দিকে একটি ছোট্ট তিলক ছিল। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তিলকটি বড় হতে থাকে। সম্প্রতি গ্রামের এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় তিনি ছেলেকে নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে দেখিয়েছেন। চিকিৎসকরা অস্ত্রপাচারের পরামর্শ দিয়েছেন। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে তিনি ছেলের জন্য কিছু করতে পারছেন না।

এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মো. রফিকুল হাসান বলেন, রোগটিকে বলা হয় ‘মেলানোমা’। কয়েকটি ধাপে এর অস্ত্রপাচার করতে হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে এটি হতে পারে।

শামিমের বাবা আফসুর হোসেন বলেন, টাকার অভাবে ছেলের অপারেশন করতে পারছিনা। বাবা হয়ে অসহায় লাগে। সমাজের বৃত্তবানরা সহযোগিতা করলে আমার ছেলেটা বাঁচতো। তাই আমি সবার সহযোগিতা চাই।

Leave a Reply