Friday, April 26

হিজড়াদের যৌনাঙ্গের স্থানে কি থাকে?

হিজড়া না সম্পূর্ণ রুপে পুরুষ হয় আর না মহিলা । এমন একটা সম্প্রদায় যার বর্ণনা ধর্মগ্রন্থে আছে । তারা আপনার প্রত্যেক সুখে দুঃখে যোগদান করে। যাদের প্রার্থনা খুব পবিত্র বলে মনে করা হয় এবং যাদের অভিশাপ ভয়ানক হয় । আপনার সাথে তাদের দৈনন্দিন দেখা হয়, তা আপনি লোকাল ট্রেনে হোন বা শহরের বাস স্টপেজে । আপনি সবাইকে টাকা দিতে অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু হিজড়াদের ক্ষেত্রে এটি বিপরীত হয়।
হিজড়াদের একটি ভিন্ন জগৎ আছে যার ব্যাপারে কেউই বেশি কিছু জানে না। তাদের জীবনধারা স্বাভাবিক মানুষের থেকে বিপরীত। তাদের সম্পর্কে জানার কৌতূহল প্রত্যেক মানুষের মনে হয়। আসুন আমরা আজকের সূত্রে পৌঁছানোর জন্য আপনার কৌতূহলের সারথী হয়ে উঠি। হিজড়াদের ব্যপারে আটটি এমন তথ্য শুনলে আপনি অবাক হয়ে উঠবেন।

জ্যোতিষ অনুসারে

জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী বীর্য বেশী হলে পুরুষ (পুত্র) জন্মগ্রহণ করে । রক্ত ​​বেশি হলে মহিলা (কন্যা) জন্মগ্রহণ করে ‌। যখন বীর্য এবং রক্ত সমান হয় তখন হিজড়ার জন্ম হয়। বলা হয় কুষ্টিতে বুধ, শনি, শুক্রে আর কেতু খারাপ হলে হিজড়া বা নপুংসক জন্ম হয়।
>সমাজে কোন হিজড়া মারা গেলে তার খবর পর্যন্ত পাওয়া যায় না

কোন হিজড়া মারা গেলে তার শেষকৃত্য খুবই গোপনীয় ভাবে করা হয়।

নতুন হিজড়া দলে যুক্ত হলে নাচ-গান খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়

কোন ব্যক্তি হিজড়া সমাজে অংশগ্রহণ করলে তাকে অনেক রীতিনীতি মেনে যোগদান করানো হয়।

হিজড়ারা তাদের আরাধ্য দেবতা আরাবণকে বছরে একবার বিয়ে করে । অবশ্য এই বিয়ে শুধুমাত্র একদিনের জন্য হয়।
মহাভারতের প্রাচীন গ্রন্থে শিখন্ডিকে হিজড়া বলা হত

বলা হয় যে শিখন্ডীর কারণেই অর্জুন ভীষ্মকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিল।

মহাভারতে যখন পাণ্ডবরা জঙ্গলে এক বছর অজ্ঞাতবাসে ছিলেন তখন অর্জুন একবছর ধরে হিজড়া বৃহন্নলা হয়ে ছিলেন ।
একটি তথ্য অনুযায়ী হিজড়াদের উৎপত্তি ব্রহ্মার ছায়া থেকে হয়েছিল ।

অন্যদিকে অনেকে এমনও মনে করেন যে, আরিষ্টা এবং কশ্যপ ঋষি থেকে হিজড়ার উৎপত্তি।

“পাঁচ তলাতে নয়কো যারা, গাছ তলাতেই থাকে

তোমার কলম তাদের ব্যাথার একটু কি খোঁজ রাখে?

ডুবুছে যারা জটিল জীবন চোরাবালির পাঁকে

তাদের চোখের জলে ক’জন চাল চিত্তির আঁকে।” (ভবানী প্রসাদ)

হিজড়া শব্দটির সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত। নারীও নয় আবার পুরুষও নয়- এমন এক ধরনের মানুষ হলো হিজড়া।দেখতে পুরুষ কিন্তু স্বভাব চরিত্রে, বলা-কওয়ায়, ভাব-ভঙ্গিতে মেয়েলি ভাব এরা হিজড়া। আমাদের দেশে প্র্রকৃত হিজড়ার চেয়ে কৃত্রিম বা বানানো হিজড়ার সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশ মানবাধিকার সূত্রে জানা যায় সারাদেশে হিজড়ার সংখ্যা ৫০ হাজার। কৃত্রিম হিজড়া ২০ হাজার। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু এক্স-এক্স প্যাটার্নে কন্যা শিশু আর এক্স-ওয়াই প্যাটার্নে পুত্র শিশু জন্ম গ্রহণ করে। কিন্তু অনেক সময় জরায়ুতে ভ্রুণের বিকাশ হওয়ার সময় মায়েদের বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানুষিক সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর তখন এক্স- এক্স- ওয়াই(xxy), অথবা এক্স-ওয়াই-ওয়াই(xyy) এর প্যাটার্নে ছেলে বা মেয়ে হয়ে থাকে। এরপর জেনেটিক পরির্বতনের কারণে এসব ছেলে মেয়েরাই হিজড়ায় পরিণত হয়।

পৃথিবীতে মোট চার ধরনের হিজড়া দেখা যায়:

• যারা দেখতে পুরুষের মতো কিন্তু মানসিকভাবে নারী স্বভাবের তাদেরকে বলা হয় অকুয়া।

• কিছু হিজড়া দেখতে নারীর মতো কিন্তু মানসিকভাবে পুরুষ স্বভাবের তাদেরকে বলা হয় জেনানা।

• কিছু হিজড়া রয়েছে যারা উভলিঙ্গ বিশিষ্ট বা লিঙ্গ হীন। ।আরবিতে ‘খুনসা মুশকিল ‘বলা হয় এদেরকে।

• আরেক প্রকারের হিজরা রয়েছে যাদেরকে কৃত্তিমভাবে যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে হিজড়া বানানো হয়। এদেরকে খোঁজা বলা হয়।

এই দুর্ভোগ থেকে হিজড়াদের পরিত্রাণের উপায় ?

হিজড়াদের নিয়ে যারা কাজ করছেন, তারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের মতো আমাদের দেশেও হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলেন। তারা মনে করছেন নারী-পুরুষের বাইরে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের জায়গাতে তারা কিছুটা সুযোগ পাবেন। আবার অনেকেই বলেন, স্বীকৃতির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে তারা সামাজিক সুবিধাগুলো গ্রহণ করতে পারবে।

হিজরাদের সম্পর্কে কী বলে ইসলাম?

আল্লাহ তায়ালার একমাত্র মনোনিত জীবন বিধান ইসলামে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ বা হিজড়াদের ‘মুখান্নাতুন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আন নববী বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, মুখান্নাতুন দুই প্রকারের : প্রথম প্রকারের হচ্ছে তারা যারা জন্মগতভাবে হিজড়া এবং তাদের কোন দোষ নেই, তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই, কোন লজ্জা নেই যতক্ষণ পর্যন্ত তারা কোন অবৈধ কাজ না করে এবং পতিতাবৃত্তিতে না জড়িয়ে পড়ে। আর দ্বিতীয় শ্রেনীর ব্যক্তি হচ্ছে তারাই যারা অনৈতিক উদ্যেশ্যে মেয়েলি আচরণ করে এবং তারা পাপী ।

মৌলিকভাবে ইসলামে পুরুষ ও নারীকেই গণ্য করে থাকে। আর যারা উভলিঙ্গ হয়ে থাকেন তারাও মূলত হয় নারী হোন বা পুরুষ হয়ে থাকেন। তাই তাদের ব্যাপারে আলাদা কোন বিধান আরোপ করা হয়নি। যে উভলিঙ্গের অধিকারী ব্যক্তির মাঝে যেটি বেশি থাকবে, তিনি সেই প্রজাতির অন্তর্ভূক্ত হবেন। তাই তাদের ব্যাপারে আলাদা কোন বিধান আরোপ হবার প্রয়োজনই।

রাসূল সাঃ এ ব্যাপারে বলেন,

أن عليا رضي الله عنه : سئل عن المولود لا يدري أرجل أم امرأة فقال علي رضي الله عنه يورث من حيث يبول

হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ কে প্রসূত বাচ্চা যে পুরুষ নারী তা জানা যায় না তার বিধান কি? জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূল সাঃ জবাব দিলেন যে, সে মিরাস পাবে যেভাবে প্রস্রাব করে। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১২৯৪, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৩০৪০৩, মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১৯২০৪}

হিজড়াদের ক্ষেত্রে বিধান হল তাদের নারী বা পুরুষের যে কোন একটি ক্যাটাগরিতে ফেলতে হবে। রাসূল সাঃ এ ব্যাপারে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেটা হল, দেখতে হবে হিজড়ার প্রস্রাব করার অঙ্গটি কেমন? সে কি পুরুষদের গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে? না নারীদের মত গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে? গোপনাঙ্গ যাদের মত হবে হুকুম তাদের মতই হবে। অর্থাৎ গোপনাঙ্গ যদি পুরুষালী হয়, তাহলে পুরুষ। যদি নারীর মত হয়, তাহলে নারী। আর যদি কোনটিই বুঝা না যায়। তাহলে তাকে নারী হিসেবে গণ্য করা হবে। সেই হিসেবেই তাদের উপর শরয়ী বিধান আরোপিত হবে।

বৃটেনের সাবেক হিজড়া সেনা। এখন তিনি একজন মুসলিম নারী হিসেবে জীবন যাপন করছেন।

তাই আসুন হিজড়াদের নিয়ে আমরা আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তন করি

সবার আগে একটি চিন্তা সমাজের সকলের মধ্যে বিদ্ধ করে নেওয়া দরকার আর তা হলো হিজরাড়াও মানুষ। আর যিনি মানব জাতির স্রষ্টা, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মালিক তিনিই ভাল জানেন একজন হিজড়ার দুনিয়ায় চলার জন্য কি বিধান প্রযোজ্য। দুনিয়ার বুদ্ধিমান (?) মানুষগুলো যখন কোন সমস্যার সমাধান দেয় তখন দেখা যায় তা থেকে নতুন করে আরো একাধিক সমস্যার উদ্ধব ঘটে। যেমন নারী নির্যাতন কমাতে বুদ্ধিমান (?) মানুষগুলো মনে করল ফ্রি মিক্সিংকে (নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা) অনুমোদন দিলে এবং এর ব্যাপকতা বাড়ালে নারীদের প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে। ফলে আমাদের সমাজের পুরুষগুলো নারীদের আর নির্যাতন করবে না। কিন্তু ফলাফল হলো উল্টো। ফ্রি মিক্সিং এর ফলে নারী নির্যাতন এখন যেমন আগের চেয়ে সহজতর হয়েছে তেমনি জ্যামিতিক হারে তান প্রকোপ বৃদ্ধিও পেয়েছে।

তাই একথায় আসা যায় যে হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ আমাদের সমাজে সমাধান নয় বরং সমস্যা দেখা দিবে । তাদের কে ইসলামের নিয়ম মত

Leave a Reply