Monday, December 15

চোখে আঘাত পেলে কী করবেন

 

কোনো কোনো চোখের সমস্যা যেমন চোখের আঘাত—নিশ্চিতভাবে জরুরি অবস্থা। অন্যান্য চোখের সমস্যাকে কম জরুরি বলে মনে হতে পারে, যেমন অসুস্থতা বা সংক্রমণের চিহ্ন, কিন্তু যদি সেখানে বিপদচিহ্ন দেখা যায়, তবে এগুলোও খুব দ্রুত অন্ধত্বের সৃষ্টি করতে পারে।

চোখে আঘাত

যেকোনো ধারালো জিনিস বা কাঁটা, ডালপালা বা কারখানা অথবা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে হয় এমন ধাতব বস্তু, যেগুলোর চোখে আঁচড় লাগতে পারে, সেগুলো চোখে মারাত্মকভাবে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। অক্ষিগোলকের মধ্যে কোনো ক্ষত তৈরি হলে তা বিশেষভাবে মারাত্মক।

যদি কারো ঘুষি, পাথর বা অন্যান্য কঠিন বস্তু দ্বারা জোরে আঘাত লাগে, তবে চোখে খুবই ব্যথা হতে পারে এবং তা খুবই সমস্যা করতে পারে।

 

বিপদচিহ্নগুলো

♦ একটি বা উভয় চোখেই হঠাৎ দৃষ্টিহানি হওয়া

♦ কোনো আঘাতে অক্ষিগোলক কেটে যাওয়া বা চোখের পাতা কেটে যাওয়া

♦ কোনো আঘাতে চোখের রঙিন অংশটিতে রক্ত জমে যাওয়া

♦ চোখের পরিষ্কার অংশটিতে (কর্নিয়া) সাদা-ধূসর দাগসহ চোখে তীব্র ব্যথা

♦ চোখের ভেতরে তীব্র ব্যথা

♦ চোখের রঙিন অংশে পুঁজ

♦ একটি কোলের শিশু বা বাড়ন্ত শিশুর চোখের মণি ঘোলাটে বা সাদা

♦ ছোট ছোট কালো ফোঁটা দেখলেই এগুলো চোখের জরুরি অবস্থা হবে তা নয়, যদি না এগুলো হঠাৎ করেই আলোর ঝলকানির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়। যখন চোখের ভেতরের একটি অংশ যার নাম রেটিনা, চোখের পেছন দিক থেকে আলগা হয়ে খুলে আসে এটি হতে পারে। তখন দৃষ্টিহীনতা এড়াতে শিগগিরই অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।

♦ হঠাৎ সব কিছুই দুটি করে দেখা, বিশেষ করে দুই চোখে একই সঙ্গে, বেশ কয়েকটি সমস্যার একটি চিহ্ন হতে পারে।

কর্নিয়ার পেছনে পুঁজ (হাইপোপাইয়ন)

চোখের পরিষ্কার আবরণ ও রঙিন অংশের (কনীনিকা) মধ্যে পুঁজ জমে যাওয়া চোখের জন্য বিপদের একটি লক্ষণ। কর্নিয়ার আলসারের কারণে বা চোখের অস্ত্রোপচারের পর এটি হতে পারে।

রাসায়নিক থেকে চোখের ক্ষত

যখন পরিষ্কারক, কীটনাশক, পেট্রল বা অন্যান্য জ্বালানি, গাড়ির ব্যাটারির এসিড, সাপের বিষ, চুনের গুঁড়া (চুনা পাথর) বা অন্যান্য রাসায়নিক চোখে যায়, তখন এগুলো চোখে তৎক্ষণাৎ ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এ কাজগুলো করতে হবে দ্রুত।

♦ চোখে ঢালার জন্য আপনার প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার পানি প্রয়োজন হবে।

♦ ধীরে ধীরে চোখের ওপর কমপক্ষে ১৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট পানি ঢালতে হবে।

যেকোনো চোখের আঘাত দৃষ্টিহীনতা তৈরি করতে পারে, তাই সময় নষ্ট না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত, যাতে দৃষ্টি বাঁচানো সম্ভব হয়।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. শরমীন সোহেলী

সিনিয়র কনসালট্যান্ট

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ঢাকা

 

সূত্রঃ কালের কন্ঠ

Leave a Reply