যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ পদস্থ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টার যোগাযোগ ছিল রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে। রাশিয়ার এসব কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরিচিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক গোয়েন্দা সূত্র, আইন প্রয়োগকারী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এমন তথ্য দিয়েছেন সিএনএন’কে। বলা হয়েছে, রাশিয়ার ওই সব কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের যোগাযোগ ছিল তার মধ্যে অন্যতম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ত্যাগ করা মাইকেল ফ্লিন, তৎকালীন নির্বাচনী প্রচারণা বিষয়ক ম্যানেজার পল মানাফোর্ট, সাবেক পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কার্টার পেজ প্রমুখ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। এতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ট্রাম্পের সহযোগী, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের যোগাযোগের বিষয়টি জানানো হয়েছিল সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্পকে। তাদেরকে ওই যোগাযোগের বিশদ জানানো হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের ওপর নজর রাখে মার্কিন গোয়েন্দারা। তারা রাশিয়ান কর্মকর্তা ও ট্রাম্পের ওইসব উপদেষ্টার ফোনালাপে আড়িপেতে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দলের প্রচারণা টিমের সদস্য ও বিদেশী সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে নিয়মিত এমন যোগাযোগ ছিল অস্বাভাবিক। এটা এতটা ঘন ঘন হয়েছে এবং এতে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা জড়িত থাকায় বিষয়টি তদন্ত করা উচিত। ওই যোগাযোগ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের আগে ও পরে। তাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ সুবিধা পাওয়ার কথা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাশিয়ানরা অধিক সুবিধা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছে। তবে এ নিয়ে যত কথাই বলা হোক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা টিমের ম্যানেজার মানাফোর্ট অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার কাছে নিউ ইয়র্ক টাইমস মন্তব্য চাইলে তিনি এমন যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেন। তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, আমি জানি না এটা দিয়ে কি বোঝানো হচ্ছে। আমি কখনো রাশিয়ার কোনো গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি নি। রাশিয়া সরকার, পুতিন প্রশাসন অথবা এখন যেসব বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে এর কোনো কিছুর সঙ্গেই আমি জড়িত নই। উল্লেখ্য, এসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা এর আগেই অভিযোগ করেছে নির্বাচনকালে ডেমোক্রেটিক পার্টি ও এর বিভিন্ন কর্মকর্তার ওপর সাইবার হামলা করেছে রাশিয়া। তার মধ্যে নতুন এসব তথ্য বেরিয়ে আসায় উদ্বেগ জোরালো হচ্ছে। এখন এফবিআই এবং যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যাচাই করে দেখছেন ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের সঙ্গে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের ওই যোগাযোগের উদ্দেশ্য কি ছিল।