বলিউডের শক্তিশালী অভিনেতা ইরফান খান ও বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিশা অভিনীত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘ডুব’-এর শুটিং এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সমপ্রতি চলচ্চিত্রটি প্রিভিউ কমিটিতে জমা পড়েছে। এদিকে আরেক নির্মাতা-অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের ছবিটি নিয়ে অভিযোগ, তার প্রয়াত স্বামী কিংবদন্তি নির্মাতা-সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জীবনের কিছু স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ‘ডুব’ চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য সাজানো হয়েছে। যার মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের মানহানি ঘটতে পারে। তাই সবকিছু যাচাই-বাছাই করার অনুরোধ করে ১৩ই ফেব্রুয়ারি সেন্সরবোর্ডে একটি চিঠি জমা দিয়েছেন শাওন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেন্সরবোর্ডের একাধিক সদস্য। তবে এই চিঠির বিপরীতে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, প্রিভিউ কমিটি ইতিমধ্যে ছবিটি দেখেছেন। এখন যেকোনো দিন সেন্সরবোর্ড সদস্যরা ছবিটি দেখবেন। এরপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে এ চিঠির বিপরীতে ‘ডুব’ ছবির নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে আমি একটা গল্প বলেছি এ ছবিতে। এর গল্প সম্পূর্ণ মৌলিক। এটা কোনো প্রকাশিত উপন্যাস, গল্প, কবিতা কিংবা জীবনী অবলম্বনে বানানো হয়নি। অভিযোগে বলা হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদের আত্মজীবনী নিয়ে ছবিটি বানানো হয়েছে। কিন্তু এটি ঠিক না। এ ছবির প্রধান চরিত্রের নাম জাভেদ হাসান। হুমায়ূন আহমেদ নামে কোনো চরিত্র নেই। ফলে এটা নিয়ে তাঁর অভিযোগ করার কি হলো সেটা বুঝলাম না। আর এ ছবিটি নিয়ে অভিযোগ করার আইনগত এখতিয়ার আছে কিনা সেটাও আমি জানি না। শাওন অভিযোগে বলেছেন, এ ছবির কারণে তিনি এবং তার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে এ ছবিতে শাওন নামেও কোনো চরিত্র নেই। তাহলে কিভাবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফারুকী আরো বলেন, এভাবে চলতে থাকলে তো কোনো গল্পই আর বলা যাবে না বাংলাদেশে। কারণ যে কেউই একজন এসে বলতে পারে এ ছবিতে একটা প্রেম বা বিয়ের দৃশ্য দেখানো হয়েছে যা আমার জীবনের সঙ্গে মিলে গেছে। ছবিটি আটকে দেন বলে যে কেউই তখন অভিযোগ করতে পারে। পরিচালকের গল্প বলার স্বাধীনতা তখন থাকবে না। অভিযোগের বিষয়টি আমার কাছে উদ্ভট একটা বিষয় মনে হয়েছে। এদিকে চিঠি প্রসঙ্গে শাওন বলেন, জি, আমি একটি চিঠি জমা দিয়েছি সেন্সরবোর্ডে। তবে, ছবিটি বন্ধ করার বিষয়ে ওই চিঠিতে আমার কোনো বক্তব্য ছিল না। কারণ, আমি বন্ধ করার কেউ নই। আমি শুধু আমার আপত্তির বিষয়গুলো তুলে ধরেছি সম্মানিত সেন্সবোর্ডের সদস্যদের সামনে। চিঠিতে আমি স্পষ্ট ভাষায় বলেছি,
ছবিটিতে যদি হুমায়ূন আহমেদ ও তার পরিবারের কোনো সদস্যদের বাস্তব জীবনের ছায়া কিংবা কোনো ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়। কারণ, ছবিটির পরিচালক-প্রযোজক হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের কোনো সদস্যের অনুমতি
ছাড়াই এটি নির্মাণ করেছেন। চিঠির বিষয়ে শাওন আরো বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের বেশ কিছু সংবাদপত্র ‘ডুব’ ছবি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এগুলো পড়ে আমার মনে হয়েছে যে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের স্পর্শকাতর কিছু বিষয় নিয়ে এ ছবিটি তৈরি। এমন সংবাদ দেখে আমার মনে হয়েছে যে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের ছায়া অবলম্বনে বা জীবনের অংশ বলা হয়ে থাকলেও তা আমার নিকট পরিষ্কার নয়। সেই জায়গা থেকে বিষয়টি আমার নিকট যথেষ্ট আশঙ্কার কারণ মনে হয়েছে। এজন্য সবকিছু যাচাই করার জন্য প্রিভিউ কমিটিকে চিঠিটি দেয়া। ‘ডুব’ যৌথ প্রযোজনার একটি চলচ্চিত্র। এখানে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান খান, তিশা, রোকেয়া প্রাচী, পার্ণো মিত্র প্রমুখ। ছবিটি প্রযোজনা করেছে বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার এসকে মুভিজ। সহ-প্রযোজক হিসেবে আছেন ইরফান খান।