
রূপচর্চায় প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার উপকারী। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে না।
তাই ত্বক ও চুলের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ঠিক মতো ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
রূপচর্চা-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি রূপচর্চার ব্র্যান্ড ‘ভিল্ভাহ’র প্রতিষ্ঠাতা ক্রুথিকা কুমারান এর দেওয়া পরামর্শগুলো এখানে দেওয়া হল।
রোদপোড়া কমানোর ফেইস প্যাক
কুমারান বলেন, “হলুদের সঙ্গে দেশি দই মিশিয়ে ব্যবহার করলে তা ত্বকের পোড়াভাব কমাতে সহায়তা করে।
উপকরণ: দুই টেবিল-চামচ হলুদের গুঁড়া, দুই চা-চামচ দেশি টক দই।
পদ্ধতি: উপকরণ দুইটি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি সারা মুখ ও পোড়াভাব আছে এমন স্থানে ব্যবহার করুন। প্যাক ব্যবহারের পরে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। প্যাক শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ভালো ফলাফলের জন্য চার সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে।
আর্দ্রতা রক্ষাকার ফেইস প্যাক
ত্বকে হলুদ ব্যবহার চামড়া ওঠার সমস্যা ও শুষ্কতার দূর করে উজ্জ্বলভাব আনে। মধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপ্টিক ও ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান সমৃদ্ধ যা ব্রণ-সহ ত্বকের নানান সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া এটা লোমকূপ উন্মুক্ত করতে ও ব্ল্যাক হেডস দূর করে ত্বককে সারাদিন আর্দ্র রাখতে রাখতে সহায়তা করে- বলে জানান কুমারান।
উপকরণ: ১/৪ চা-চামচ হলুদের গুঁড়া। ১ টেবিল-চামচ দুধ। ১ চা-চামচ মধু।
পদ্ধতি: ১/৪ চা-চামচ হলুদের গুঁড়ার সঙ্গে এক টেবিল-চামচ দুধ ও এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। মুখ ও গলায় ব্যবহার করুন। প্যাকটি শুকানোর জন্য ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে এই মাস্ক দুতিন বার ব্যবহার করতে হবে।
পরামর্শ
সঙ্গে খালি পেটে খাঁটি ও ভোজ্য গোলাপ জল খাওয়া উপকারী। আধা গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চা-চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে পান করুন। এটা মানব শরীরের তিনটি দশা বা রোগ প্রতিকারে সহায়তা করে। যাদের সাধারণত পিত্ত-জনিত সমস্যা আছে তারা ব্রণ, একজিমা ও সিরোসিস সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয় বলে জানান, কুমারান।
চুলের ভেষজ যত্ন
চুলে তাজা অ্যালো ভেরার জেল ব্যবহার প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং এটা চুল সজ্জাকারি জেল হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। চুল গজাতে সাহায্য করে এমন কয়েকটি প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে অ্যালো ভেরা অন্যতম।
চুলের প্যাক
রাতে চুলের মাস্ক হিসেবে অ্যালো ভেরা ব্যবহার করা যেতে পারে। চুলের ফলিকল শক্ত করতে এতে দই যোগ করতে পারেন। অ্যালো ভেরা ও দই একসঙ্গে ব্যবহার করে চুল মসৃণ হয়। অ্যালো ভেরার প্রোটেওলাইটিক এঞ্জাইম মাথার ত্বকের মৃত কোষ পুর্নগঠন করে। সারা রাত অ্যালো ভেরা ও দইয়ের তৈরি মাস্ক চুলে রেখে দিলে পরদিন পাওয়া যাবে মসৃণ ও ঝলমলে চুল।
উপকরণ: দুই টেবিল চামচ অ্যালো-ভেরারা জেল। দুই টেবিল-চামচ দই।
পদ্ধতি: উপকরণ দুইটি ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। সারা রাত মাস্ক চুলে ব্যবহার করে রেখে দিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ‘শাওয়ার ক্যাপ’ পরে নিন। সারা রাত অপেক্ষা করে পরদিন সকালে চুল ধুয়ে ফেলুন।
পরামর্শ
ব্যবহারে আগে অ্যালো ভেরা জেল রেফ্রিজারেইটরে রেখে ঠাণ্ডা করে নিন। এর সঙ্গে জলপাইয়ের তেল ও দই মেশান। হাতে সময় কম থাকলে মাস্কটি চুলের গোড়ায় ব্যবহার করে অন্তত ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
লিভ-ইন কন্ডিশনার
কুমারনের মতে, অ্যালো ভেরায় থাকা ময়েশ্চারাইজার চুল ‘কন্ডিশনিং’ করতে সহায়তা করে, এর পুষ্টি উপাদান চুল আর্দ্র রাখে। শ্যাম্পু করার পরে অ্যালো ভেরাকে লিভ-ইন কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
উপকরণ: এক চা-চামচ অ্যালো ভেরা।
পদ্ধতি: শ্যাম্পু করার পরে ভেজা চুলে তাজা অ্যালোর ভেরা সম্পূর্ণ চুলে ব্যবহার করুন।
এটা চুল চিটচিটে ও ভারী করা ছাড়াই উজ্জ্বল দেখাতে সহায়তা করবে।