রাজধানীর হাজারীবাগে থাকা সকল ট্যানারি অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ লক্ষ্যে ট্যানারি কারখানাগুলোর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে ট্যানারি বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ কাজে সহযোগিতা করতে স্বরাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত ৩রা জানুয়ারি হাইকোর্টে এ বিষয়ে একটি আবেদন করেন। আদালতে বেলার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী ফিদা এম. কামাল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মিনহাজুল হক চৌধুরী। শিল্প সচিবের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রইস উদ্দীন আহমদ। রিজওয়ানা হাসান গতকাল সাংবাদিকদের জানান, ট্যানারি কারখানাগুলো বন্ধসহ তাদের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশনা চেয়ে এ আবেদন করা হয়। আদালত অবিলম্বে ট্যানারিগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামী ৬ই এপ্রিল দাখিল করতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ই জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এক আদেশে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি কারখানা না সরানো পর্যন্ত পরিবেশের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫৪ ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ট্যানারি মালিকরা এ বিষয়ে আপিল করেন। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ জরিমানার টাকা কমিয়ে দৈনিক ১০ হাজার টাকা করে নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু ট্যানারি না সরানো ও জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৫শে জানুয়ারি শিল্প সচিবকে আদালতে তলব করা হয়। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি শিল্প সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আদালতে হাজির হয়ে জানান, হাজারীবাগে দেড়শর বেশি ট্যানারি কারখানার কাছে ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। পরে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের এক সম্পূরক আবেদনে শুনানি শেষে গত ২রা মার্চ বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে ট্যানারি কারখানাগুলোকে বকেয়ার টাকা দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।