
ডেঙ্গু এডিস মশার কারণে হয়। ডেঙ্গু হলে সাধারণত রোগীর রক্তের প্লাটিলেট দ্রুত কমে যেতে থাকে। যদিও এই রোগের এখনো কোনো প্রতিকার নেই, একমাত্র বিকল্প হলো উপসর্গগুলো মোকাবেলা করা এবং প্লাটিলেটের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস হওয়া বন্ধ করা। সঠিক খাদ্য নির্দেশনা আপনার স্বাস্থ্যকে স্থিতিশীল করতে এবং প্লাটিলেটের সংখ্যা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার
সাধারণত ডেঙ্গু হলে সারা দিনে অন্তত আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। জ্বর হলে পানি পান করতে অনেকেরই ইচ্ছা হয় না, তাই পানির চাহিদা পূরণ করতে ফলের রস/জুস (বাড়িতে তৈরি), সবজি ও চিকেন স্যুপ, লেবু পানি ইত্যাদি গ্রহণ করাতে পারেন। ডাবের পানিতে বিভিন্ন খনিজ আছে, যা ডেঙ্গুতে ইলেকট্রলাইট ইমব্যালান্স হওয়া থেকে রক্ষা করে।
উচ্চ ক্যালরির খাবার
জ্বরে শক্তির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শক্তিবর্ধক খাবার দেওয়া উচিত। রোগীর ক্ষুধা ও রুচি অনুযায়ী খাদ্য পরিবেশনে বৈচিত্র্য আনতে হবে। উচ্চ ক্যালরির সহজপাচ্য, নরম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করাতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবারের আধিক্য ঘটিয়ে তার খাবার তৈরি করতে হবে।
আয়রন ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার
মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা, ডাল, বাদাম, ড্রাই ফ্রুটস, খেজুর ইত্যাদি থেকে আয়রন পাওয়া যায়। রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে, রক্তক্ষরণ রোধে ও প্লাটিলেট গঠনের জন্য অপরিহার্য খনিজ উপাদান হলো আয়রন। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার যেমন—টক সব ফল, লেবু, মাল্টা, পেয়ারা, আনারস, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এটিতে অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভিটামিন ‘কে’ সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন ‘কে’ রক্ত জমাট বাঁধার জন্য অপরিহার্য, ডেঙ্গুর সময় প্লাটিলেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ব্রকোলি, স্প্রাউট ও গাঢ় সবুজ শাকসবজি ভিটামিন ‘কে’র ভালো উৎস।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
* চর্বিযুক্ত খাবার ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের হজম ক্ষমতা হ্রাস করে। জ্বরে আক্রান্ত হলে যেকোনো চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
* ঝাল মসলাদার খাবার পেটে এসিড তৈরি করে। এতে পেটের প্রদাহ তৈরি করতে পারে এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
* ডেঙ্গুর সময় শরীরে হাইড্রেশনের জন্য প্রচুর তরল প্রয়োজন। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন কফি, চা ও অ্যানার্জি ড্রিংকস শরীরকে সহজেই ডিহাইড্রেটেড করে তোলে এবং এতে পেশি ভাঙনও হতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন
পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ
গুলশান ডায়াবেটিক কেয়ার, ঢাকা
সূত্রঃ কালের কন্ঠ