Wednesday, May 21

চাকরির জন্য ঘুরছেন মৃত রেলকর্মীর পোষ্যরা

কর্মরত অবস্থায় রেলওয়ের কোনো সরকারি কর্মীর মৃত্যু হলে তার পরিবারের সদস্য চাকরি পাবেন। বিভিন্ন সময় পোষ্য কোটায় সদস্যদের কেউ কেউ চাকরি পেয়েও আসছেন। আবার কেউ কেউ বছরের পর বছর ঘুরে চাকরি পাচ্ছেন না। এমন প্রায় দুই শতাধিক সন্তান (পোষ্য) রেলপথমন্ত্রী, সচিব, রেলের মহাপরিচালকের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। এদের প্রতি ন্যূনতম সহযোগিতা করা হচ্ছে না। বরং বিভিন্ন সময় রেলভবনে প্রবেশসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখাও করতে পারছেন না।

কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যাওয়া রেলওয়ে পোষ্যদের পক্ষে মো. নূর হাসান সম্প্রতি দুটি স্মারকলিপি দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী বরাবর। বিধি অনুযায়ী এদের সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণির শূন্য পদে চাকরি দিতে অনুরোধ করেছেন। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্র অনুযায়ী-‘কর্তব্যরত কোনো রেল কর্মচারী মারা গেলে মৃত কর্মচারীর পোষ্যর চাকরি দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, আমাদের অধিকার আদায়ে কঠোর আন্দোলনে যাবে। ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট পোষ্যের চাকরি প্রদান বিষয়ে তৎকালীন রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় রেলওয়ে দুই অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক, দুই রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ আরও দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যাওয়া রেলওয়ে কর্মচারীর একজন পোষ্যকে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৩য়/৪র্থ শ্রেণির শূন্য পদে চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর জারিকৃত পরিপত্রটি অনুসরণ করতে হবে।’ অর্থাৎ বিধি অনুযায়ী এদের চাকরি প্রদান নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়।

১৯৮৭ সালে রেলে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃতের সন্তান বা স্ত্রীকে যোগ্যতানুসারে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণির পদে চাকরি প্রদানের বিধান চালু করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে ১৯৯১ সাল থেকে পোষ্যদের ক্ষেত্রে চাকরি প্রদানে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা অনীহা প্রকাশ করতে শুরু করে। ১৯৯১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৫৬টি আবেদনপত্র পড়লে কারও চাকরি হয়নি। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এমন আরও অন্তত ২০০টি আবেদনপত্র জমা দেওয়া হলেও কারও চাকরি হয়নি। তবে বেশ কয়েকজন বঞ্চিত পোষ্য জানান, উল্লিখিত সময়ে কারও কারও চাকরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পছন্দমতো নিজেদের লোককে চাকরি দিয়েছেন।

চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি রেলওয়ে মহাপরিচালক ডিএন মজুমদার স্বাক্ষরিত রেলপথ সচিব বরাবর প্রেরিত পত্রে বলা হয়েছে, ‘রেলে কর্তব্যরত অবস্থায় কোনো কর্মচারীর মৃত্যু হলে এদের পোষ্যকে চাকরি দেওয়ার বিধান রেলে রয়েছে। এটা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ থেকে ভিন্ন। ওই নিয়োগ পৃথক কমিটি দিয়ে করা হয়ে থাকে।’ পোষ্যদের সরাসরি চাকরি প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য রেল সচিবকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন রেলওয়ে মহাপরিচালক।

বৃহস্পতিবার বিকালে রেলওয়ে মহাপরিচালক ডিএন মজুমদার বলেন, ‘পোষ্যরা দিনের পর দিন চাকরির জন্য ঘুরছেন। আমি কয়েকবার ঊর্ধ্বতন বরাবর পত্রও দিয়েছি। নতুন নিয়োগ বিধিমালায় এদের সরাসরি চাকরি দেওয়ার বিধান রাখা হয়নি।’

Leave a Reply