Saturday, April 20

ভৈরবের মাদ্রাসা ছাত্র জাসিমকে গলাটিপে হত্যার পর বস্তাবন্দি লাশ চট্রগ্রাম কর্ণফূলি নদীতে ॥ দুই আসামী মুছা ও সাকিব গ্রেপতার।

আশরাফুল  আলম||ভৈরব-কুলিয়ারচর প্রতিনিধি||    কিশোরগঞ্জ ভৈরব উপজেলা মাদ্রাসা ছাত্র জাসিমকে গলাটিপে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে কর্ণফূলী ব্রীজ থেকে নদীতে ফেলে দিয়ে খুনের ঘটনা আড়াল করতে চাইলেও ভৈরব থানা পুলিশের কর্মদক্ষতায় সপ্তাহ পেরুতেই জাসিম হত্যাকারী চট্টগ্রাম লালখান বাজার এলাকার আমিন সেন্টার এবাদত খানার ইমাম মোঃ খোরশেদ আলম ওরপে মুছা (৩৮) সহ অপহরণকারী মোতাসিম বিল্লাহ সাকিব (১৭) কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া সাকিলের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার চড্ডা গ্রামে। পিতার নাম মাহমাদুল হাসান সাকিল। নিহত মাদ্রাসা ছাত্র জাসিমুর রহমান জাসিম (১৩) কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা শহরের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। চলতি মাসের ১৬ তারিখ ভৈরবপুরস্থ বাসা থেকে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। পরে এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে ভৈরব থানায় জিডি করা হয়। (জিডি নং-৯৫৮, তারিখ: ২০-০৯-২০১৭ইং)। কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খাঁন রোববার ১ অক্টোবর সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সার্বিক ব্রিফিং করেন। ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, সাকিব নিখোঁজ হওয়ার ৫ দিন পর অপহরণকারী মোতাসিম বিল্লাহ সাকিব (১৭) জাসিমের বড় ভাই নাইমুল ইসলামকে ফোন করে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। পরে ভৈরব থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারী মোতাসিম বিল্লাহ সাকিবকে ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা যাত্রাবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করার পর আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে সাকিব। স্বীকারুক্তিতে সাকিব জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে মুক্তিপন আদায়ের জন্য জাসিমকে অপহরণ করে চট্টগ্রাম খুলশী থানাধীন লালখানা বাজার এলাকার আমীন সেন্টার এবাদত খানার ইমাম মোঃ খোরশেদ আলম ওরফে মুছার (৩৮) নিকট আটক করে রাখা হয়। তখনও জাসিম খুন হয়েছে বলে জানা ছিলনা অপহরণকারী সাকিবের। সাকিবের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকারী খোরশেদ আলম মুছাকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামস্থ লালখান বাজার ভাড়া বাসা থেকে আটক করা হয়। আটকের পর মুছা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণ ও জাসিমকে ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে গলাটিপে হত্যা করে বস্তায় ভরে কর্ণফুলী ব্রীজ থেকে নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেন বলে জানানো হয়। জাসিমের লাশ উদ্ধার করতে ভৈরব থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ভৈরব থানা গোলঘরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম, ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোখলেছুর রহমান, ওসি তদন্ত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মামলার তদন্তকারী অফিসার এস.আই মাজাহারুল ইসলাম সহ অন্যান্য পুলিশ অফিসারগণ। এসময় নিহত জাসিমের পিতা মাওলানা এরফান উল্লাহ, রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মোঃরফিকুল ইসলাম সহ কমলপুর মাদ্রাসার শিক্ষকগণ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply