Sunday, April 21

বর্তমান সরকারের আমলে নারীর ক্ষমতায়নকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে : শ্রম প্রতিমন্ত্রী

শ্রম প্রতিমন্ত্রীশ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো: মুজিবুল হক এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে নারীর ক্ষমতায়নকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেযা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নারীশ্রমিকদের সমতা ও মর্যাদার অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সরকার তাদের সাথে আছে। এ সরকার যদি আরো ২/১ টার্ম ক্ষমতায় থাকে, তাহলে নারীনেত্রীদের আর আন্দোলনের কোন দরকার হবে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই তাদের হয়ে আন্দোলন করছেন।
আজ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ৩৫টি নারী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’ সংগঠনের জন্মানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
জন্মানুষ্ঠানে ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’ নারীশ্রমিক সম্মেলনের আয়োজন করে এবং সংগঠনের স্লোগান নির্ধারণ করে ‘নারী শ্রমিক কণ্ঠের অঙ্গীকার, চাই সমতা ও মর্যাদার অধিকার’।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি রেড্ডি, নারীদের নিয়ে কাজ করা জার্মানীভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটাং (এফইএস) এর আবাসিক প্রতিনিধি ফ্রানজিসকা কর্ণ, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, নারী শ্রমিক কণ্ঠ’র উপদেষ্টা ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, উপদেষ্টা সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
নতুন সংগঠন ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’র আহবায়ক শিরীন আক্তার এমপি’র সভাপতিত্বে সংগঠনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠনের নারী নেত্রীবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, নারীশ্রমিকদের উন্নয়নে সরকার বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সাভার, ঈশ্বরদী ও চট্টগ্রামে ট্রেনিং সেন্টার দিচ্ছে। সেখানে ট্রেনিংকালীন নারীদের থাকা-খাওয়া ফ্রি ও পকেটমানি দেয়া হবে। সেই সাথে টেনিংয়ের পরে সরকার চাকরী দেয়ারও নিশ্চয়তা দিচ্ছে এবং চাকরিকালীন প্রথম ৩ মাস নারীরা ওই ডর্মেটরিতে থাকারও সুযোগ পাবে।
গার্মেন্টস শ্রমিকরা ১৫/২০ বছর চাকরি করেও সন্তানের জন্য তেমন সঞ্চয় রেখে যেতে পারেন না উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ফ্যাক্টরি মালিকদের কাছ থেকে তাদের লভ্যাংশের দশমিক শূন্য ৩ পার্সেন্ট সহায়তা নিয়ে চলতি বছরের পয়লা জুলাই একটি ফান্ড গঠন করেছে। বর্তমানে এ ফান্ডে ১৮ কোটি টাকা আছে।
তিনি বলেন, কর্মরত অবস্থায় যদি কোন শ্রমিক মারা যায়, তাহলে তার পরিবার এ ফান্ড থেকে ৩ লাখ এবং জীবন থেকে ২ লাখ মোট ৫ লাখ টাকা পাবে। এছাড়া গুরুতর অসুস্থ হলে যে কোন শ্রমিক চিকিৎসা বাবদ পাবে ১ লাখ টাকা। মহিলা শ্রমিকরা মাতৃত্বকালীন ১০ মাসে তার প্রতিষ্ঠানের বেতন/ভাতার বাইরে এ ফান্ড থেকে পাবে ২৫ হাজার টাকা। এ সব উদ্যোগই এ সরকারের সময়ে নেয়া হয়েছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোন শ্রমিকের সন্তান যদি সরকারী মেডিকেল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়, তাহলে তাকে এককালীন ৩ লাখ টাকা, যদি কারো সন্তান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় তাহলে তাকে এ ফান্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, লেবার ল’ অনুযায়ী ফ্যাক্টরি মালিকদের কাছ থেকে তাদের লভ্যাংশের ৫% শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য নিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আরো একটি ফান্ড গঠন করেছে। সেই ফান্ডে বর্তমানে ২০০ কোটি টাকা আছে।
এ ফান্ড থেকেও ফ্যাক্টরির শ্রমিকরাসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকরাও সহায়তা পাবেন। তবে এ জন্য তাদের শ্রমিক পরিচয় সম্বলিত কাগজপত্র দিয়ে পোস্ট অফিস বা ব্যাংকে একাউন্ট করতে হবে। সেই একাউন্টে ওই শ্রমিক প্রতি মাসে যত টাকা রাখবে, এই ফান্ড থেকেও তাকে তত টাকা দেয়া হবে। যদি কোন শ্রমিক এই একাউন্ট করার পর মারা যান, তাহলে তার জমাকৃত টাকার পাশাপাশি তার পরিবারকে এ ফান্ড থেকে আরো ২ লাখ টাকা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তাজরিন, রানা প্লাজাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এছাড়া ভারতী কুজুর ও মানিকগঞ্জের ধানসিঁড়ি শিল্পী গোষ্ঠী দেশের গান পরিবেশন করে।

Leave a Reply