Friday, April 26

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় আহত ২৪

ছাত্রলীগের হামলায় আহত – জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কার, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা ও সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিতর্কিত বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধকালে ছাত্রলীগের হামলায় কর্মরত দুই সাংবাদিকসহ ২৪ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরপরই সন্ধ্যা ৬টায় শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সন্ধ্যা ৬টায় ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তার বক্তব্য চলাকালীন ‘জয় বাংলা’স্লোগানে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের নেতৃত্বে দুই শতাধিক নেতাকর্মীর একটি মিছিল উপস্থিত হয়।

মিছিল থেকে নেতাকর্মীরা অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে শিক্ষার্থীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে এবং মারধর করে। বেধড়ক পিটুনিতে দুই সাংবাদিকসহ ২৪ শিক্ষার্থী আহত হন।

আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর আহত দুই শিক্ষার্থীকে এনাম মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। মহাসড়কে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ শিক্ষার্থী সমাবেশের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা সাভার হাইওয়ে থানার সামনে অবস্থান করে।

সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীতে বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে পূর্ণ সহমত পোষণ করে সার্বিক সহযোগিতার ঘোষণা দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে কোটা পদ্ধতির সংস্কারে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘এমন ঘটান আমি আশা করিনি। সারা দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শেষে বিশৃঙ্খলা কাম্য ছিল না। সবার সঙ্গে কথা বলে মীমাংসার চেষ্টা করব।

সন্ধ্যায় ভিসির বক্তব্য চলাকালীন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এ হমলা অনাকাঙ্ক্ষিত। ভিসির উপস্থিতিতে অতর্কিত হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

এ ছাড়া পরবর্তীতে হলে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা হামলার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ কোনো হামলা করেনি। আমরা সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছি।’

এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার রক্ষা পরিষদের মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান জানান, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ন্যক্ক্যারজনক হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই হামলার বিচার দাবি করছি।’

Leave a Reply