Sunday, April 21

যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে ৬০ নারী সাংবাদিকের ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ

মাঠে কাজ করতে গেলেই যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয় নারী সাংবাদিকদের। ব্রাজিলের ক্রীড়াক্ষেত্রে এই সমস্যাটি যেন প্রতিনিয়ত ডালভাতে পরিণত হচ্ছে। এ নিয়ে যখন বিতর্ক, তখনই রুখে দাঁড়াল দেশটির নারী ক্রীড়া সাংবাদিকরা। শুরু হয়েছে প্রতিবাদের ব্যতিক্রমী আন্দোলন। যেখানে অংশ নিয়েছেন মোট ৬০ নারী সাংবাদিক।

যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের শুরুটা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। হ্যাশট্যাগ (#) ‘লেট হার ওয়ার্ক’ ক্যাম্পেইন ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে, জুটছে বাড়তি সমর্থন।

ব্রাজিলীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এই ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছিল ৩ নারই ক্রীড়া সাংবাদিকের মাধ্যমে। যারা কিনা  নিয়মিতভাবে খেলার মাঠে কাজ করতে গিয়ে যৌন হেনস্তার শিকার হচ্ছিলেন। এসবের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যায় খেলোয়াড়দের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় পেছন থেকে বা সামনে থেকেই চুমু দেওয়া, জড়িয়ে ধরার মতো ঘটনা ঘটছে। সমর্থকদের পাশাপাশি খেলোয়াড়রাও সরাসরি এই কাজে অংশ নিচ্ছে! তাদেরকে একদিকে যেমন আপত্তিকর মেসেজ দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।

সরাসরি যৌন হেনস্তার শিকার হওয়া এক নারী ক্রীড়া সাংবাদিক বিবিয়ানা বলসন বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ব্রাজিলের জন্য এটা অনেক স্পেশাল ব্যাপার। বলা চলে ‘#MeToo’; ক্যাম্পেইন যেটাও  কিনা এই যৌন হয়রানির বিরুদ্ধেই হয়েছিল সেটার মতোই। ব্রাজিলের সবাইকে বুঝতে হবে নারীরাও যেখানে চায় সেখানেই কাজ করতে পারে।

ইউরো কাপ চলাকালীন সময়ে এই বলসনের মুখের খুব কাছে এসে এক পুরুষ দর্শক জোরে চিৎকার করে। একজন তার দিকে এসে চেঁচাতে বলে, সে নারী বলে ফুটবল কাভার করার মতো যোগ্যতা রাখে না। আরেকজন লোক এসে তার মুখে থুথু দিয়ে যায়। আরেকজন তার মুখে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করে।

আরেক নারী সাংবাদিক ব্রুনা ডেল্ট্রাই বলেছেন, ‘একজন নারী যে কিনা কাজ করছে, তার সামনে এসে  অনুমতি ছাড়া মুখে চুমু দেওয়া…আজ  আমি খুব অসহায় বোধ করছি। খোলা স্টেডিয়াম, মেট্রো কিংবা একা একা যখন পথে হাঁটছি; সব সময় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে চাই।’

এসব বলে তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন যেটি দেড় মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে।

সাংবাদিক বলসন বিবিসিকে দেওয়া সেই সাক্ষাতকারে এটাও বলেছেন  যে, ব্রাজিলে ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক নারী কাজ করে। কিন্তু এখন তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ব্রাজিলে ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক নারীরা কাজ করছেন। তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারটা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।’

নারী সাংবাদিকদের এই ক্যাম্পেইনে পাশে দাঁড়িয়েছে সমর্থকরাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা। সেসব সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে তৈরি হয়েছে ভিডিও। সেটি স্টেডিয়ামে খেলা চলাকালীন সময়ে সাইডস্ক্রিনে দেখানোও হচ্ছে। সবাই জানাচ্ছে, তারা ব্রাজিলের নারী ক্রীড়া সাংবাদিকদের পাশে আছে।

Leave a Reply