নতুন করে ইরানের ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। রোববার ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় ইরাকের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবিশেষের ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সিএনএন’র খবরে বলা হয়, ইরানের পূর্ববর্তী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে লেখা এক চিঠিতে বৃহস্পতিবার উভয় দলের একাধিক সিনেটর লিখেছেন, গভীর অস্থিতিশীলতা আনয়নকারী তৎপরতা, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধে ইরানের নেতাদের অবশ্যই যথেষ্ট চাপ অনুভব করাতে হবে। দেশটির ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার সম্পূর্ণ প্রয়োগ ও অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ইরানের ওপর সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘বিবেচনার বাইরে নেই কিছুই’। তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা জানান। একে ‘উস্কানিমূলক’ আখ্যা দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, এই পরীক্ষা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার লঙ্ঘণ। তবে ইরান বলছে, জাতিসংঘের কোন ম্যান্ডেট তারা ভঙ্গ করেনি।
হোয়াইট হাউজের ব্রিফিং রুম থেকে ফ্লিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, আমরা ইরানকে আমাদের নজরের মধ্যে রাখছি।’ এদিকে তেহরানে ইরানের উপদেষ্টা আলি আকবার বেলায়েতি সাংবাদিকদের কাছে মার্কিন নেতার ‘ভিত্তিহীন বিষেদাগারে’র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, এমনকি আমেরিকানরাও ট্রাম্পের চরমপন্থা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। বেলায়েতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনভিজ্ঞতা নিয়েও খোঁচা মারেন। বলেন, তার উচিৎ পূর্বসূরি বারাক ওবামার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া। যারা মুসলিম বিশ্বকে হুমকি দেয়, তাদের উচিৎ আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতার দিকে একবার তাকানো।
তার ভাষ্য, ইরানের সকল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাই প্রতিরক্ষামূলক। আর এ কর্মকান্ড চালাতে কারও অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন বলে ইরান মনে করে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের এমন উত্তেজনা ইরান পারমাণবিক চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করেছে। ওই চুক্তির আওতায় ইরান নিজেদের পারমাণবিক প্রকল্প সীমিত করার বদলে মার্কিন আর্থিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেকদিন ধরে এ চুক্তির বিরোধী। ২ বছর ধরে নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী রাষ্ট্র ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের সমঝোতা আলোচনার পর ওই চুক্তি সম্পাদিত হয়।