ওয়ান্ডারার্সে শনিবার অনুষ্ঠিত তৃতীয় একদিনের ম্যাচে শ্রীলংকাকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টসে জিতে সফরকারী দলকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমান করেই স্বাগতিক বোলারা লংকানদের ইনিংস মাত্র ১৬৩ রানে গুটিয়ে দেয়। জবাবে ডি ভিলিয়ার্সের অপরাজিত ৬০ রানে মাত্র ৩২ ওভারে ৩ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা। ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে সাড়া বিশ্বজুড়ে সচেতনতা সৃষ্টির অংশ হিসেবে গতকাল ওয়ান্ডারার্সে ‘‘পিংক ডে” পালন করা হয়। সে কারনে দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়রা গোলাপি জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন। একইসাথে স্টেডিয়ামে আগত সমর্থকরাও গতকাল প্রায় সবাই গোলাপি রঙ্গে সজ্জিত হয়ে এসেছিলেন। ম্যাচ শেষে ডি ভিলিয়ার্সv বলেছেন, এখানকার সমর্থকরা অসাধারণ, কিন্তু তাদের সামনে ৩০০ কিংবা আরো বেশী ছক্কা মারতে না পারায় আমরা দু:খিত। আমাদের আজ মূল লক্ষ্যই ছিল সিরিজ জয় করা। আমাদের বোলাররা দারুন পারফর্ম করেছে। এখানকার উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব একটা সহজ নয়। শ্রীলংকা যদি আরো ১০০ রান যোগ করতে পারতো তবে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যেত।
এদিকে পাঁচজন ব্যাটসম্যান শর্ট-পিচ বলে আউট হওয়ায় শ্রীলংকান অধিনায়ক উপল থারাঙ্গা আবারো দলের ব্যাটিং পারফরমেন্স নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের শুরুটা ভালই হয়েছিল কিন্তু তা ধরে রাখা যায়নি। নিরোশান ডিকওয়েলা ভাল ব্যাট করেছে কিন্তু তাকে সহযোগিতা করার মত কেউ ছিল না।
ডিকওয়েলার ৭৪ রান সত্তেও শ্রীলংকার ইনিংস ৩৯.২ ওভারেই গুটিয়ে যায়। এই নিয়ে সিরিজের তিনটি ম্যাচের প্রতিটিতেই পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে ব্যর্থ হলো লংকানরা। এই রান নিয়ে জয় পাওয়া মোটেই সহজ নয়। তারপরেও পেসার সুরাঙ্গা লাকমাল ও নতুন বোলার লাহিরু কুমারা ও লাহিরু মাদুশাঙ্কা প্রথম দিকে স্বাগতিকদের চাপে ফেলেছিল। কুমারা ও মাদুশাঙ্কা দুজনেই উইকেট তুলে নেন। তার আগে অবশ্য লাকমালের বলে ১২ রানে হাশিম আমলার উইকেটে পিছনে দিনেশ চান্ডিমালের হাতে জীবন ফিরে পান। ৩৪ রানে অবশ্য ডিপ একস্ট্রা কভারে মাদুশাঙ্কার দূর্দান্ত এক থ্রোতে শেষ পর্যন্ত ৩৪ রানে রান আউট হয়ে সাজঘরের পথ দেখেন আমলা।
বাঁহাতি ডিকওয়েলা ২৫ রানে কাগিসো রাবাদার বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট জেপি ডুমিনির হাতে জীবন ফিরে পান। দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের বেশ কয়েকটি শর্ট পিচ বলে তাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। ৫৫ রানে ডিকওয়েলা যখন পিচে প্রায় স্থায়ী হয়ে গেছেন ঠিক তখনই ইনিংসের ২৬.৩ ওভারে মৌমাছির কারনে প্রায় ঘন্টখানেক ম্যাচ বন্ধ ছিল। শ্রীলংকার স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১১৭। ঘন্টাখানেক পরে স্থানীয় মৌমাছি শিকারীদের সহায়তায় শেষ পর্যন্ত মাঠ পুনরায় মৌমাছি মুক্ত করা হয়।
ডিকওয়েলা এরপর ১৯ রান যোগ করেন। ৮০ বলে তার ব্যাট থেকে এসেছে সাতটি বাউন্ডারি। ডুয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে কুইনটন ডি ককের হাতে ধরা পড়েন লংবান এই ওপেনার। ৭২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটি ডি ককের ১০০তম ডিসমিসাল ছিল।
এর আগে উপল থারাঙ্গাকে সাথে নিয়ে ডিকওয়েলার সিরিজের সবচেয়ে ভাল সূচনা এনে দেন লংকানদের। ৩১ রানে রাবাদার বলে থারাঙ্গা ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেবার আগে এই জুটি প্রথম উইকেটে ৬০ রান যোগ করেন।