Tuesday, March 19

আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা দূর করতে যা খাবেন

রক্তস্বল্পতা কোনো রোগ নয়, এটি রোগের লক্ষণ। আয়রনের অভাবজনিত জটিলতা বা আয়রনের অভাবজনিত কারণে রক্তস্বল্পতা হতে পারে। খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন না থাকলে বা আয়রনের অভাব দেখা দিলে গর্ভাবস্থায় এবং শিশুর বেড়ে ওঠার সময় বাড়তি আয়রনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দেখা যায় সে অনুযায়ী গর্ভবতী মায়েদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হয় না।

 

কিছু পরিবার বা এলাকায় গর্ভবতী মায়েদের কম খেতে দেওয়া হয়। যেসব নারী অতিরিক্ত ঋতুস্রাবজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাঁদেরও আয়রনজনিত রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। পেপটিক আলসার, কৃমি, পাইলস, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার ওষুধ সেবন, দীর্ঘমেয়াদি অপ্রয়োজনীয় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণে এবং দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষরণ হলে আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা হতে পারে। এ ছাড়া নিরামিষভোজী যাঁরা মাংসের পরিবর্তে অন্যান্য আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখেন না, দরিদ্র বা গৃহহীন এবং খাবারের সহজলভ্যতা নেই—এমন লোকদের, বয়স্ক ব্যক্তি যাঁরা একটি সম্পূর্ণ বা বিবিধ খাদ্য গ্রহণ করেন না, ফলমূল, শাক-সবজি ও মাংসের পরিমাণ কম খাওয়া হয় ইত্যাদি কারণে লোকজনের আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা দেখা যায়।

লক্ষণ

♦ শরীর ও চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া

♦ বুক ধড়ফড় করা

♦ দুর্বলতা ও সামান্য পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া

♦ ব্যায়ামের পর শ্বাসকষ্ট হওয়া

♦ খাবারে অরুচি ও ক্ষুধামান্দ্য

♦ নখ ভঙ্গুর হওয়া

♦ কাজকর্ম-পড়ালেখায় অমনোযোগী হওয়া ইত্যাদি

করণীয়

এ সমস্যা সমাধানে খাদ্যতালিকা আয়রনজাতীয় খাবারে সমৃদ্ধ হলে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আয়রন আমরা দুটি উৎস থেকে পাই; একটি হিম আয়রন, অন্যটি নন-হিম আয়রন। প্রাণিজ উৎস থেকে যে আয়রনগুলো পাই তা হিমজাতীয়, যা সহজেই শরীরে শোষিত হয় আর উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে যেগুলো পাই, সেগুলো নন-হিম উৎস। নন-হিম জাতীয় উৎস থেকে যেগুলো পাই সেগুলো শোষণের জন্য ভিটামিন ‘সি’ প্রয়োজন। সে জন্য নন-হিম আয়রন জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে অবশ্যই তার সঙ্গে ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার রাখতে হবে।

গরু, খাসিসহ বিভিন্ন লাল মাংস, কলিজা বা অন্যান্য অংশ, মুরগির মাংস ও ডিমে আছে হিম আয়রন। নন-হিম উৎস হলো কলা, কচু, ডাঁটাশাক, লালশাক, শিম ও শিমের বিচি, কাঁচকলা, চিড়া, ফুলকপির ডাঁটা, ধনিয়া পাতা, কালোজাম, শালগম, পাকা তেঁতুল, মটরশুঁটি, স্ট্রবেরি, তরমুজ, আপেল, পেয়ারা, বেদানা, ওটস, লাল চাল ইত্যাদি। এ ছাড়া শুকনো ফল যেমন—কিশমিশ, কুমড়ার বিচি, খেজুর, আখরোট, বাদাম ইত্যাদিতেও আছে আয়রন।

পরামর্শ দিয়েছেন

নাহিদা আহমেদ

পুষ্টিবিদ, গুলশান ডায়াবেটিক কেয়ার

 

সূত্রঃ কালের কন্ঠ

Leave a Reply