
রাঙামাটির লংগদুতে পাহাড়িদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
১২ জুন সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিকোলাস চাকমা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠান। স্বরাষ্ট্র সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, চট্টগ্রামের রেঞ্জের ডিআইজি, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশ প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের কোনো ব্যর্থতা রয়েছে কি না, তা সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত করতে হবে। এই তদন্তের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
এর আগে এক বাঙালি যুবককে খুনের অভিযোগে গত ১ জুন বাঙালিরা পাহাড়িদের পাড়ায় আক্রমণ করে তাদের বসতবাড়িতে। ওইদিন দুপুরে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কে চার কিলোমিটার এলাকা থেকে যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত নুরুল ইসলাম উপজেলা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ২ জুন শুক্রবার সকাল আটটায় তার লাশ লংগদু বাত্যপাড়া গ্রামে নিয়ে আসা হয়।
ঘটনার পর উপজেলা পরিষদের মাঠে বাঙালিরা সমাবেশ করেন। সেখানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, পাহাড়িরা নুরুল ইসলামকে হত্যা করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা শাখার জনসংহতি সমিতির সভাপতি মনি শংকর চাকমা বলেন, পাহাড়িদের দায়ী করে শুক্রবার সকালে বাঙালিরা তিন টিলা ও মানিকজোর ছড়া গ্রামে পাহাড়িদের দুই শতাধিক বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছেন।
লংগদু উপজেলা সদরের তিনটিলা পাড়া ও মানিকজুড় ছড়াসহ চারটি গ্রামে পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ায় কথা পুলিশও জানায়।
পাহাড়িদের বাসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১০ জুন ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে চার-পাঁচ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছে পাহাড়িরা।
এর আগে ৩ জুন শনিবার লংগদুর ওই নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।