Saturday, April 20

ব্রেকিং নিউজ ! পাল্টাপাল্টি হামলা চালাতে যাচ্ছে দুই দেশ !

জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের সামনে ভাষণ দিতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ উপস্থিত থাকছেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও৷ অ্যামেরিকা সে দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিচ্ছে৷

উত্তর কোরিয়াকে বশে আনতে কূটনৈতিক উদ্যোগ এখনো তেমন সফল হয়নি৷ জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে সে দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় সায় দিলেও চীন ও রাশিয়া এই সঙ্কটের মুখে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে৷ শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর সোমবার উত্তর কোরিয়ার কাছেই এই দুই দেশ যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে শক্তি প্রদর্শন করছে৷ ওখোটস্ক সাগরের দক্ষিণে দুই দেশের নৌবাহিনী দ্বিতীয় পর্বের মহড়া চালাচ্ছে৷ এর আগে বাল্টিক সাগরে প্রথম পর্বের মহড়া হয়েছিল৷ অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার সমরসজ্জাকে চীন ও রাশিয়া হুমকি হিসেবে দেখছে৷ তাই উত্তেজনা কমাতে সব পক্ষকেই সামরিক আস্ফালন কমানোর প্রস্তাব দিচ্ছে এই দুই দেশ৷

এমনই প্রেক্ষাপটে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে বিশ্বনেতারা অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে কোরীয় উপদ্বীপে সংকট নিয়েও আলাপ-আলোচনা করতে চলেছেন৷ তাদের বক্তব্য কার্যকর করার কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার হুমকির প্রশ্নে যত বেশি সম্ভব দেশের সমর্থন আদায় করতে চায় অ্যামেরিকা৷

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসঙ্ঘ তাদের সামনে ভাষণ দেবেন৷ জাতিসংঘের উপর তেমন আস্থা না দেখালেও ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর কোরিয়া সংকটের আন্তর্জাতিক মাত্রা তুলে ধরতে চায়৷ ট্রাম্প বলতে চান, এই সংঘাত অ্যামেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে নয়, উত্তর কোরিয়া গোটা বিশ্বকে হুমকি দিচ্ছে৷ জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হেলি বলেছেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হাতে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবার আর কোনো পথ বাকি নেই৷ সে দেশের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেই শেষ পর্যন্ত পদক্ষেপ নিতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি৷

ট্রাম্পের ভাষণের সময় প্রথম সারিতে উপস্থিত থাকবেন উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিরা৷ সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং-হো সর্বোচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে আলোচনা করবেন৷ উল্লেখ্য, তিনি শুক্রবার এই অধিবেশনে ভাষণ দেবেন৷ গুতেরেস বলেছেন, রাজনৈতিক পথেই এই সংকটের সমাধানসূত্র খুঁজতে হবে৷ সামরিক সঙ্ঘাত হলে কয়েক প্রজন্মকে তার পরিণতি সামলাতে হবে৷

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে রবিবার আলোচনা করেছেন৷ তবে সেই বৈঠকে সিরিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন সঙ্কটের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷

ক্যালিফোর্নিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবে উ. কোরিয়া!

মার্কিন ভূখণ্ডে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে হলে উত্তর কোরিয়া ক্যালিফোর্নিয়াকেই বেছে নেবে বলে দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন বিশ্লেষক হ্যাল ক্যাম্পফার। পাশাপাশি সম্ভাব্য পরমাণু হামলার পর গোটা ক্যালিফোর্নিয়ায় কি ভয়াবহ পরিস্থিতি নেমে আসবে হবে তারও রোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি। বর্তমানে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বা ডিএইচএসে সন্ত্রাসবাদ ও গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন।

মার্কিন জনস্বাস্থ্য এবং জরুরি সেবায় জড়িত কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
হ্যাল ক্যাম্পফার বলেন, উত্তর কোরিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করলে ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচ পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর অন্যতম ব্যস্ত ব্যবসা কেন্দ্র এবং বিশ্ব বাণিজ্যের একটি গুরত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় একে হামলার জন্য বেছে নেয়া হবে। অবশ্য গোটা ক্যালিফোর্নিয়া ধ্বংস করার মতো শক্তিশালী পরমাণু বোমা পিয়ংইয়ংয়ের নেই বলে মনে করেন তিনি। তারপরও হামলায় বড় ধরণের বিপর্যয় নেমে আসবে সেখানে। লাখ লাখ মানুষ মারা যাবেন।

পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট বিদ্যুৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ বা ইএমপি কাছাকাছি সব ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতির কার্যকারিতা ধ্বংস করে দেবে। এতে অকেজো হয়ে যাবে মোটর গাড়ি ও ফোন লাইনের মৌলিক বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিও। সাহায্যের জন্য ফোন করাও জটিল হয়ে দাঁড়াবে।
কোনোভাবে গাড়ি স্টার্ট দিতে পারলে নগরী ছেড়ে সহজে বের হওয়া যাবে না। কারণ পলায়নপর মানুষের যানজটের বিশাল সারিতে পড়তে হবে সেখানেও।

এ ছাড়া, খাদ্য ও নিত্যপণ্য নিয়ে দাঙ্গা ও বন্দুকযুদ্ধ শুরু হবে বলেও মনে করেন তিনি।
জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় সমন্বয়ের ভিত্তিতে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার উপযোগী প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply