
হার্টের অসুখ ও ক্যানসার ঠেকাতে পারে যোনিরস
ভাইরাল হওয়া এমন দাবি ঘিরেই তোলপাড় শুরু হল। শুরু হল তুমুল বিতর্ক। ফের জেগে উঠল ‘ছত্রাক’ স্মৃতি। সেই পাওলি-অনুব্রতর বিতর্কিত দৃশ্য। নতুন করে তা সার্চ ইঞ্জিনে লিখতে শুরু করল নেট স্যাভি বং।
বিতর্কের জল ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে রাজ্যের বেডরুমেও। কেউ বলছেন, এই তথ্য বিপ্লব আনবে যৌনজীবনে। কেউ বলছেন বিপর্যয়। রাজ্যের বেশিরভাগ চিকিৎসক যদিও অন্ধকারে।
একদল অবশ্য জানিয়েছেন, এতে প্রবল ঝুঁকি রয়েছে। লাভের থেকে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি।
ফোর জি-র জমানায় চোখের পলকে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে ভিডিও। তা সে গুডমর্নিং উইশ হোক বা চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা যৌনজীবন। মুহূর্তে ডাউনলোড হয়ে যাচ্ছে নীল ছবির ক্লিপিংস। জেন ওয়াই তা অনুকরণ করার চেষ্টাও করছে। পর্নোগ্রাফিতে যৌনতার কায়দা দেখে তা ব্যক্তিগত জীবনে প্রয়োগ করার উদাহারণ ভূরিভূরি। কিন্তু ‘ওরাল সেক্স’? নীলছবির এ ছোঁয়া বেডরুমে নিয়ে আসতে প্রমাদই গোনে আম বাঙালি। পাছে কিছু হয়। কিন্তু সে ভয়কেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে ফ্রান্সের ফার্মাবায়োটিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নয়া গবেষণা। শহরের একাধিক স্মার্টফোনে ঘুরছে গবেষণার রিপোর্ট। সে রিপোর্ট পড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে!
বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের ছাত্র প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, “পশ্চিমি সভ্যতার তুলনায় বাঙালি অনেকটাই রক্ষণশীল। যৌনজীবন নিয়ে আলোচনা করতে তাঁরা কিন্তু কিন্তু করে। পরীক্ষামূলক যৌনতায় এখনও পিছিয়েই তারা। তবে এই রিপোর্টৈর পর অনেকেই সাহস দেখাবেন বেডরুমে। ” আরও সাহসী সমর্থনে শহরের মাল্টিমিডিয়া কর্মী শ্রীপর্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “এতো পুরুষদের জন্য দারুন খবর। বিনোদন আর শুশ্রুষা একসঙ্গে মিলছে। ” কেউ নেট দুনিয়া ঘেঁটেও দাবির সমর্থনে জোগাড় করেছেন মণিমুক্তো। সেখানেও একাধিক সাইটে এমন তথ্যের জন্য হাতে গরম প্রমাণ রয়েছে।
সবটাই কি ভিত্তিহীন? প্রশ্ন যাদবপুরের প্রাক্তনী মধুরিতার। দাবি নিয়ে নেটদুনিয়া বলছে, “যোনিরস বা ভ্যাজাইনাল ফ্লুইডে একধরনের ভাল ব্যাকটিরিয়া থাকে, যা প্রোবায়োটিক বলেই পরিচিত। বহু অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পর ডাক্তাররা এই প্রোবায়োটিক যুক্ত ওষুধ প্রেসক্রাইব করে থাকেন। ” থাকে ল্যাক্টোব্যাসিলাস ব্যাকটিরিয়া। যা ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে পিএইচ ব্যালান্স রক্ষা করে। এমনকি হার্টের অসুখ ও ক্যানসার ঠেকাতেও সাহায্য করে যোনিরসে থাকা ডিএইচইএ, অক্সিটোসিন-সহ একাধিক হরমোন। কেউ আবার বলছেন, যোনিরসে নাকি হতাশা কাটে, যন্ত্রণা কমে। যদিও এমন তথ্য উড়িয়ে দিয়েছেন শহরের বেশিরভাগ চিকিৎসক। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রঞ্জিত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “ যোনি লেহন অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রবণতা। এতে যৌনরোগ সংক্রামিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়। ”
বিশিষ্ট ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অভিষেক দে জানিয়েছেন, নেট দুনিয়ায় ভাসমান এই পেপারগুলো বেশিরভাগই কাল্পনিক। অনুকরণ করতে গেলে সমূহ বিপদ। যৌনতার ক্ষেত্রে সনাতনী পদ্ধতি অনেক নিরাপদ। তবে যোনিরসের এই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর মতে, “অনেক সময় হাইপোথেটিকাল তত্ত্বই ভাইরাল হয়ে যায় নেট দুনিয়ায়। এসব ক্ষেত্রে আরও বেশি ক্লিনিকাল ট্রায়াল প্রয়োজন। ” একধাপ এগিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ফার্মাকোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ স্বপন জানা বলেছেন, “আমাদের মানবদেহ মাইক্রোবসের মহাসাগর। আমাদের যৌনাঙ্গেও অনেক উপকারী ব্যাকটিরিয়া হরমোন রয়েছে। তবে তাতে রোগ প্রতিরোধ কতটা হয়, তা জানতে গবেষণার প্রয়োজন। ”
সূত্রঃ বিডি২৪ রিপোর্ট