Wednesday, March 27

সন্তানদের প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখলেন প্রযুক্তি গুরুরাই

নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ আমাদের কাছে স্মার্টনেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা এক ধরনের বিলাসিতাও। কোনও প্রয়োজন ছাড়াই নতুন কোনও প্রযুক্তি আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি। অন্যথায় মনে করি, আমাদের সন্তান কিংবা আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।
কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন, যারা বিশ্বের প্রযুক্তিজগত নিয়ন্ত্রণ করছে তারাও সন্তানদের প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখেন। সামর্থ্য কিংবা সুযোগ থাকার পরও বিশ্বের শীর্ষ এসব পরিবারের সন্তানদের কেন প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখা হয়?
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কোনও প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব তার সন্তানকে এই ক্ষেত্র থেকে দূরে রাখার বিষয়টি প্রথম নজরে আসে ২০১১ সালে। তখন অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস আইপ্যাডের সবশেষ ভার্সনটি তার সন্তানকে ব্যবহার করতে দেননি। অথচ ওই আইপ্যাড সন্তানকে কিনে দেয়ার জন্য বিশ্বের অনেক বাবা-মা পাগল হয়েছিলেন।

সন্তানকে আইপ্যাড না দেয়া প্রসঙ্গে স্টিভ জবস বলেন, ‘বাসায় সন্তানরা কী পরিমাণ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে তা আমরা নির্ধারণ করে দিই’। শুধু জবসই নয়, একই কাজ করেছেন বিল গেটস-মার্ক জাকারবার্গও।
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তার সন্তানদের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় বেঁধে দিয়েছেন। পড়ার টেবিলে নিষিদ্ধ করেছেন মোবাইল ফোন। এমনকি ১৪ বছর বয়সের আগে তারা মোবাইল ফোনের মালিক হতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। আর ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ২০১৭ সালে তার নবজাতক অগাস্টের উদ্দেশ্যে যে চিঠি লিখেছিলেন সেখানে তিনি তাকে ‘ঘরের বাইরে গিয়ে খেলতে’ বলেছিলেন। অর্থাৎ তিনি পরোক্ষভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য সন্তানকে নিরুৎসাহিত করেছেন।
শুধু প্রযুক্তি জগতের নিয়ন্ত্রকরাই নন, বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উদ্ভাবনী স্থান হিসেবে পরিচিত সিলিকন ভ্যালিতেও সন্তানদের প্রযুক্তি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কেউ কেউ তাদের সন্তানকে প্রযুক্তি থেকে একেবারেই বাইরে রাখছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রযুক্তি থেকে সন্তানদের এভাবে দূরে সরিয়ে রাখার কারণ হলো তাদের সুস্থ মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা। শিশুদের জন্য প্রযুক্তি আবশ্যিক নয়, সময় হলে এমনিতেই তারা এসবের সঙ্গে পরিচিত হবে।

Leave a Reply