রাজধানীর হাজারীবাগের মধুবাজার এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার আব্দুল্লাহ মনির ওরফে পিচ্চি মনির ও জুবায়ের হোসেন নামের দুজনকে আটক করেছে র্যাব
কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারিদের চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আব্দুল্লাহ মনির ওরফে পিচ্চি মনির (৩৩)। সেখান থেকে তিনি ঢাকায় ইয়াবা আনতেন। এর পর তা সরবরাহ করা হতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। এভাবেই ঢাকায় মাদকের একটি চক্র গড়ে তুলেছিলেন তিনি। অবস্থা এমন দাঁড়ায়, প্রতি মাসে কক্সবাজার থেকে ইয়াবার কয়েকটি চালান ঢাকায় আনতেন মনির।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। র্যাবের হাতে আটক হয়েছেন মনির। গত বৃস্পতিবার ঢাকার হাজারীবাগের মধুবাজার এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রির অভিযোগে পিচ্চি মনিরসহ জুবায়ের হোসেন (৩৩) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে র্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১৮ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা, ছয় গ্রাম আইস, দুটি বিদেশি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি এবং নগদ ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন জানান, কক্সবাজার থেকে মনির প্রতি মাসে ইয়াবার কয়েকটি চালান ঢাকায় আনতেন। পরে তা মিরপুর- ১৩, ইসলামবাগ, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর এবং আজিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করতেন। প্রত্যেক খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আলাদা মুঠোফোন ব্যবহার করতেন তিনি।
মাদক বিক্রি করে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছিলেন মনির, এমনটাই জানায় র্যাব। খন্দকার আল মঈন জানান, মাদক বিক্রির টাকা দিয়ে নিজ জেলা শরীয়তপুরের বাড়িতে কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছিলেন মনির। সেখানে তিনি নিজের বাবার কবরে মাজার বানানোর কাজও শুরু করেছিলেন।
র্যাব জানায়, মনিরের পরিবার জীবিকার সন্ধানে ১৯৯৫ সালে ঢাকার লালবাগে আসে। ঢাকায় মনিরের বাবা ফলের ব্যবসা শুরু করেন। মনির তাঁকে সহযোগিতা করতেন। একপর্যায়ে তিনি স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে চুরি ও ছিনতাই শুরু করেন। এ ধারাবাহিকতায় মনির লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় একটি অপরাধ চক্র গড়ে তোলেন।
২০১২ সালে মনির মাদক ব্যবসায় জড়িত হন বলে জানিয়েছে র্যাব। প্রথমে ঢাকার স্থানীয় কারবারিদের কাছ থেকে মাদক কিনে পরে তা খুচরা বিক্রি করতেন। ২০১৬ সালে কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারিদের চক্রে যুক্ত হন তিনি।
এর আগেও আটক হয়েছিলেন মনির। র্যাব জানায়, সর্বশেষ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অস্ত্র ও ইয়াবাসহ মনিরকে আটক করে। তারও আগে ২০১৮ সালে পিস্তলসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন মনির। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি আবারও মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন।