Saturday, April 20

এই গরমে শরীর ঘেমে দুর্গন্ধ হলে যা করবেন

শরীর ঘেমে দুর্গন্ধ – কোনও পার্টি বা অনুষ্ঠানে গেলে পোশাক বা লুকস অবশ্যই টিপ-টপ হওয়া জরুরি। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরি হল যাতে আপনার কাছে কেউ এসে দুর্গন্ধের চোটে নাক কুঁচকে চলে না যায়। তবে অনেকেই ভাবেন শুধু সুগন্ধী ব্যবহার করলেই শরীর থেকে ভাল গন্ধ পাওয়া যাবে। কিন্তু আসলে তা নয়, শুধু মাত্র সুগন্ধী দিয়ে শরীরের দুর্গন্ধ আটকানো যায় না।

শরীরের দুর্গন্ধের একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত শরীরের কোনও আভ্যন্তরীন কারণের জন্য শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছাড়তে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় অতিরিক্ত ঘামের ফলে দুর্গন্ধ ছাড়তে পারে শরীর থেকে।

শুধু তাই নয়, সকলের মাঝে মুহর্মুহু ঘেমে যাওয়া ভীষণ অস্বস্তিকর এবং বিড়াম্বনার হতে পারে। তাই অনেকে অস্বস্তির কারণ কোনও ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চায় না।

আর এর থেকে মানসিক অবসাদও তৈরি হতে পারে। তবে ঘামের সমস্যা অতি সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতেও দূর করা সম্ভব। তাহলে আসুন চটপট দেখে নেওয়া যাক সেই পদ্ধতিগুলি কী কী।

অ্যালকোহল পানের পরিমাণ কমাতে হবে

অ্যালকোহল সেবনের পরিমান কমানো এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরী। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত অ্যালকোহলের জেরে শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাড্রিনাল উৎপাদন হতে থাকে। যার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বেরতে শুরু করে।

অ্যাপেল সিডার ভিনিগার

অতিরিক্ত ঘামের সময়্যা দুর করতে এই অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের জুড়ি মেলা ভার। ঘুমোতে যাওয়ার আগে যদি আপনি আপনার হাতে ও বদলে এই ভিনিগার লাগিয়ে শুতে যাতে পারেন সবচেয়ে ভাল ফল পাবেন। এর ফলে শরীরের ত্বকের পিএইচ উন্নত করতে সাহায্য় করে। এর ফলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে না। ফলে ঘামের পরিমাণ অনেক কমে।

টি ট্রি অয়েল

এটি আর একটি দারুণ উপায় ঘামের পরিমাণ কম করার জন্যা। এই টি ট্রি অয়েলে স্বাভাবিক অ্যাস্ট্রিজেন্ট আছে। যা জীবাণুদের সঙ্গে লড়াই করে ঘামের পরিমাণ কমা করে। প্রত্যেকদিন হাতে ও বগলে ভাল করে মালিশ করুন।

ক্যাফারিনের পরিমাণ কম করুন

ক্যাফারিন হল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি উদ্দীপকয এর জেরে অতিরিক্ত অ্যাড্রিনালিন শরীরে উৎপাদন হতে শুরু করে। যার ফলে ঘাম হয়য। তাই কফি খাওয়ার পরিমাণ কম করুন। এতে আপনার শরীরে ঘামের পরিমাণ কম হতে সাহায্য হবে।

লেবুর রস

অতিরিক্ত ঘাম ও তার থেকে শরীরের দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণ করতে লেবুর রসের প্রয়োগ করতে পারেন। বগলে ভাল করে লেবুর রস লাগান। ১ ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে শরীরের দুর্গন্ধ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

সুতির কাপড়

সুতি, লিনেন প্রভৃতি নরম প্রকৃতির ফ্যাব্রিক ব্যবহার করুন। বিশেষ করে গরম কালে। এই ধরণের কাপড়ে শরীর নিঃশ্বাস নিতে পারে। ঠাণ্ডা হাওয়া চলাচল করতে পারে পারে এবং শরীরকে সতেজ রাখে। ঘামের পরিমাণও কম করে। সিন্থেটিক, পলিয়েস্টর, নাইলন জাতীয় কাপড় এড়িয়ে চলুন।

বেশি করে জল খাওয়া

সবশেষে শরীরের দুর্গন্ধ দুর করতে অতিরিক্ত পরিমাণে জল পান করতে থাকুন। জল খেতে থাকলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীর যত ঠান্ডা থাকবে তত কম ঘাম হবে।

গরমে অনেকেরই খুব বেশি ঘাম হয়। আর ঘামলে শরীরে তৈরি হয় দুর্গন্ধ। ঘামের কারণে শরীরের দুর্গন্ধ হলে কিছু পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।

কী করবেন

প্রতিদিন গোসল করুন। শরীরচর্চার পর অবশ্যই গোসল করতে হবে, যেন শরীরের ঘাম শুকিয়ে দুর্গন্ধের সৃষ্টি না হয়।

বগলের লোম ছেঁটে কমিয়ে রাখুন। এতে করে লোমে ঘাম আটকে থাকবে না।

খুব বেশি ঘাম হলে ডিওডোরেন্ট বা ঘাম নিরোধক জিনিস ব্যবহার করা উচিত।

অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সোপ, যেমন—কার্বলিক সোপ ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়ার আধিক্য কমিয়ে ঘামের দুর্গন্ধ দূর করা যায়।

অন্তর্বাস ও অন্যান্য কাপড় প্রতিদিন ধুয়ে ফেলুন।

গরমের সময় স্বস্তিকর ঢিলা পোশাক পরুন।

অন্তর্বাস সুতি হলে ভালো, এতে ত্বকে বাতাস চলাচল ভালো হয়।

কী করবেন না

সিনথেটিক ও আটসাট পোশাক পরবেন না।

ঘামে ভিজা কাপড় বাতাসে শুকিয়ে তা আবার ব্যবহার করবেন না।

পারফিউম বা সুগন্ধি পাউডার যত কম ব্যবহার করবেন, ততই ভালো। কারণ, এগুলো ঘাম ও ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে ভ্যাপসা গন্ধের সৃষ্টি করে।

Leave a Reply