Friday, April 26

কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার বিএনপির নিন্দা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের ‘বর্বরোচিত’ হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।

দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষাঙ্গনের গণতন্ত্র বিরোধী বিপদজ্জনক শক্তি হচ্ছে ছাত্রলীগ। গতকাল তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে। বেঁছে বেঁছে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ”

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ আমরা ইতিপূর্বে বলেছিলাম শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেওয়াটা ছিলো প্রধানমন্ত্রীর তামাশা। সমগ্র জাতি এখন সেই রঙ-তামাশা অবলোকন করছে। মূলত প্রধানমন্ত্রী সেদিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারনা করেছেন।”

‘‘ছাত্রলীগের মন শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রঙে রাঙ্গানো। এই সময়ের ছাত্রলীগ প্রকৃত কোনো ছাত্র সংগঠন নয়। এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাড়াটিয়া বাহিনী। এদের মধ্যে জ্ঞানের আলো, শিক্ষার আদর্শ, সহমর্মিতা ও সহিষ্ণুতা নেই। প্রতিবাদের আওয়াজকে গুঁড়িয়ে দিতে গুন্ডামির চেতনায় তাদেরকে তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে বর্তমানে গণতন্ত্র বিরোধী বিপদজ্জনক শক্তি হচ্ছে ছাত্রলীগ।”

ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি বলবো না যে, ছাত্রলীগের ঐতিহ্য নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল যে ঐতিহ্য রয়েছে সেটাকে অবশ্য আমরা সন্মান করি, শ্রদ্ধা করি।”

‘‘কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে যে ছাত্রলীগ, সেই ছাত্রলীগ হচ্ছে ফ্যাসিস্ট বাহিনীর ইয়াং ট্রুপার, এটা একটা গ্যাসট্রাপো বাহিনীতে পরিণত করেছে ক্ষমতাসীন দলের শাসক। এরা আইন মানে না, কানুন মানে না। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অপমান করে, শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করে, সিট বানিজ্য করে এবং প্রতিবাদের ভাষা উচ্চারিত হলেই তারা সেখানে নেখড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্তপান করে।”

রিজভী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম রাজশাহীতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। বলেছেন যে, আমেরিকার নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বাহ! যেমন গুরু তেমনি শিষ্য-এটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।”

‘‘আপনি (রফিকুল ইসলাম) এখন একটা ভোট সন্ত্রাস, ভোট জালিয়াত যেখান থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয় দিনে দুপুরে। সেই নির্বাচন কনডাকট করে যে নির্বাচন কমিশন আর তার কমিশনার হয়ে এতো খানি গলাবাজী করছেন- আপনার কী লজ্জ্বা লাগে না। নাকী আপনার সরকারের মতোই আপনার শরীর থেকে সমস্ত ভুষণ খুলে গেছে। যার সমস্ত ভুষণ খুলে যায় তার লজ্জ্বা পাওয়ার কিছু নাই। এটাই তারা করতে পারেন।”

কারাগারে বন্দি খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে আবারো তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য অবিলম্বে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের দাবি জানান রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল হক নান্নু, শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply