Friday, April 26

পরিবেশ দূষণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ১৭ লাখ শিশু: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিশ্বে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নতুন দুই প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, প্রতিবছর ১৭ লাখ শিশু মারা যাচ্ছে দূষিত পরিবেশের কারণে। সংস্থাটির ডিরেক্টর জেনারেল মার্গারেট চ্যান বলেন, ‘দূষিত পরিবেশ বিশেষ করে অল্পবয়সী শিশুদের জন্য ভয়াবহ।’ তিনি জানান, শিশুদের বিকশিত হতে থাকা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা দূষিত বায়ু ও পানির অধিকতর ঝুকিতে থাকে।
বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার দুটি প্রতিবেদনের একটিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করে এবং রান্নার জ্বালানি পরিস্কার করার মাধ্যমে ১মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু প্রতিহত করা সম্ভব। প্রতিরোধযোগ্য রোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া ও নিউমোনিয়া।
দূষনের মধ্যে সবথেকে প্রাণহাতি বায়ু দূষন। এর ফলে প্রতিবছর ৫ বয়স অনুর্ধ্ব ৫ লাখ ৭০ হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে মস্তিষ্কের বিকাশ স্থবির হয়ে যেতে পারে। কমে যেতে পারে ফুসফুসের সক্রিয়তা। ফলে শিশুরা আক্রান্ত হয় অ্যাজমায়। দীর্ঘমেয়াদে বায়ু দূষণ পরবর্তীতে শিশুদের হৃদরোগ, স্ট্রোক বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি বাড়ায়।
এমন দূষণ থেকে শিশুদের নিরাপদ রাখতে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা, বায়ু দূষণ কমানো, নিরাপদ পানি ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা, গর্ভবর্তী নারীদের সুরক্ষা ও অধিক নিরাপদ পরিবেশ গঠনের সুপারিশ করেছে।
ডব্লিউএইচও পরিচালক মারিয়া নেইরা বলেন, ‘স্বাস্থ্যের ওপর পরিবেশগত ঝুকি নির্মূলের জন্য বিনিয়োগ করার মাধ্যমে ব্যপক স্বাস্থ্যগত উপকার পাওয়া সম্ভব- যেমন পানির মান উন্নয়ন করা বা পরিচ্ছন্নতর জ্বালানি ব্যবহার করা।’
সংস্থাটির দ্বিতীয় রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিশুদের জন্য নতুন পরিবেশগত ঝুকি হয়ে উঠছে ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য। যথাযথভাবে পুনর্ব্যবহারোপযোগী  না হওয়া পুরোনো মোবাইল ফোনের মতো যন্ত্রপাতিগুলো বুদ্ধিমত্তা হ্রাস, মনোযোগে ঘাটতি, ফুসফুসে ক্ষতি এবং ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
বর্তমানে হারে চলতে থাকলে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মধ্যে এমন বর্জ্য ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে যার পরিমান দাড়াবে ৫ কোটি মেট্রিক টন।
এছাড়াও, রিপোর্টে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো ফুড চেইনের মাধ্যমে মানব দেহে প্রবেশ করে। এমন রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে রয়েছে ফ্লুয়োরাইড, সীসা ও পারদ।

Leave a Reply