Thursday, April 25

তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে ওঠার লড়াই – শাইখ সিরাজ | তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে ওঠার লড়াই – শাইখ সিরাজ |

তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে ওঠার লড়াই – শাইখ সিরাজ | তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে ওঠার লড়াই – শাইখ সিরাজ |

ঠিকঠাক হচ্ছে তো? আরও কি হবে? রংটা হঠাৎ হলুদাভ কেন? গন্ধ কেন আঁশটে? শরীরী ক্ষরণের চরম উত্তেজনার মধ্যেই অজস্র প্রশ্ন মনের ভিতর ছটফট করে। কারও সঙ্গে আলোচনা করতে লজ্জা, সঙ্গিনীর সঙ্গে শেয়ার করতে কুণ্ঠা। ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া তো দূর কি বাত।

মিলনের পর বীর্যপাত করে সুখ না পাওয়া তীব্র অস্বস্তিকর। কৈশোর থেকে প্রৌঢ়ত্বের দোরগোড়ার প্রায় সব পুরুষই কোনও না কোনও সময় বীর্যের বিচিত্র সমস্যায় উদ্বিগ্ন হন। সমস্যা সব সময় গুরু না হলেও গম্ভীর বটে।

কারণ বীর্যপাত, শুক্রাণুর সমস্যা শুধু পিতৃত্বে বাধা দেয় না। সময়মতো সঠিক ক্ষরণ না হলে পুরুষ মানসিক ও শারীরিক অস্থিরতায় ভোগে। একইসঙ্গে বীর্যের লক্ষণ দেখে ধরা পড়ে বেশ কিছু অসুখও।

বস্তুটি আসলে কী? শরীর নিঃসৃত ধাতুটিতে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১২, ক্যালসিয়াম, ক্লোরিন, জিঙ্ক, সাইট্রিক অ্যাসিড, ফ্রুকটোজ, ল্যাকটিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম। টেস্টিস, প্রস্টেট গ্রন্থি, সেমিনাল অ্যাসাইকল, বালবোইউরেথ্রাল গ্রন্থি থেকে বীর্য তৈরি হয়।

রং দেখে সাবধান: সুস্থ মানুষের বীর্যের রং সাদা। কখনও ধূসর-সাদা। তবে পঞ্চাশোর্ধ্বদের বীর্যের রং বয়সজনিত অনেক সময় হালকা হলদেটে হয়। তাতে চিন্তার কিছু নেই। অতিরিক্ত রসুন খেলেও রং হলদেটে হতে পারে। তবে বীর্যের রং রক্তাভ হলে সাবধান। এর অর্থ বীর্যের সঙ্গে রক্তপাত হচ্ছে। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে হেমাটোস্পার্মিয়া। প্রস্টেটে বায়োপসি করলে সাধারণত বীর্যের সঙ্গে রক্ত বের হয়। এছাড়া পুরুষাঙ্গের টেস্টিস, প্রস্টেটের মতো গ্রন্থিগুলিতে টিউমার বা ইনফেকশন অথবা প্রস্রাবে ইনফেকশন হলেও বীর্যের সঙ্গে রক্ত আসতে পারে। ইনফেকশনের ক্ষেত্রে ইউরিন কালচার করে কারণ অনুসন্ধান করতে হয়।বাদামি রঙের বীর্যপাত ইকোলাই, টিবির লক্ষণ। আবার অনেক সময় ইনফেকশনের কারণে রক্ত জমে বাদামি হয়ে নিঃসৃত হয়। কয়েকজনের বীর্যের রং সবুজাভও হয়। তবে তা অত্যন্ত বিরল। ঠিক কী কারণে সবুজ হয় তা নিয়ে চিকিৎসক মহলে ধোঁয়াশা রয়েছে। অনুমান, কোনও খাবারের রঙের জন্য এমন বিচিত্র রং হতে পারে। বীর্যের রং অস্বাভাবিক হলে অবশ্যই অ্যান্ড্রোলজিস্ট বা ইউরোলজিস্টের কাছে যান। ওষুধের মাধ্যমে সমস্যা সেরে যায়।

কতটা স্বাভাবিক: সাধারণত মিলন বা হস্তমৈথুনের পর প্রথমবার ৩.৭ মিলিলিটার বীর্য ক্ষরিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুনরায় করলে পরিমাণ কমে। অনেকে খুব তরল বীর্য দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন। ঘনঘন মিলনের ফলে বীর্যপাত করলে সাধারণত তা তরল হয়। এটা কোনও অসুখ নয়। বীর্য আসলে তরলই হয়। কিন্তু ক্ষরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ঈষৎ ঘন হতে থাকে। বীর্যে থাকা প্রোটিনের জন্য ঘন হয়। কিন্তু ২০ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টার মধ্যে ফের প্রোটিন ভেঙে বীর্য জলের মতো তরল হয়ে যায়।

প্রস্রাবের সঙ্গে বীর্য: সমস্যাটির নাম রেট্রোগ্রেড ইজ্যাকিউলিশন। যখন স্পার্ম বা শুক্রাণু টেস্টিস থেকে বের হয় তখন মূত্রথলির মুখ বন্ধ থাকে। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে প্রস্টেট বা মূত্রথলিতে কোনও অপারেশন বা ওষুধের জন্য স্পার্ম বেরনোর সময় মূত্রথলির মুখ খোলা থাকে। এঁদের ক্ষেত্রে স্পার্ম মূত্রথলির দিকে চলে যায় এবং প্রস্রাবের সঙ্গে বীর্য বেরিয়ে যায়। এই সমস্যা নিয়েও তেমন চিন্তার কিছু নেই। তবে ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়া ভাল। কখনও ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রস্রাবের সঙ্গে পুঁজের মতো কিছু বের হয়। অনেকে এই পুঁজের মতো অংশকে বীর্য ভেবে উদ্বিগ্ন হন।

প্রস্টেট নেই, বীর্য নেই: প্রস্টেট অপারেশনে প্রস্টেট বাদ গেলে বীর্য ক্ষরণ হয় না। কারণ, বীর্য যে পথে এসে পুরুষাঙ্গ দিয়ে বের হয় সেই পথ প্রস্টেট গ্রন্থির একটা অংশ। তবে টেস্টিকেলস না থাকলেও বীর্যপাত সম্ভব। সেক্ষেত্রে বীর্যে শুক্রাণু উপস্থিত থাকবে না।

সময় জরুরি: মিলনের কতক্ষণের মধ্যে বীর্যপাত হওয়া স্বাভাবিক তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। অনেকে ভাবেন, আধ ঘণ্টা না হলে সব ঠিকঠাক নেই। শীঘ্রপতনের আশঙ্কায় কুণ্ঠিত বোধ করেন। কিন্তু আসলে চরম মুহূর্তে পৌঁছনোর পর দু’ থেকে সাত মিনিটে বীর্যপাত হওয়া স্বাভাবিক। এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যে বীর্যপাত হলে তাকে বলে প্রিম্যাচিওর ইজ্যাকিউলেশন। এটা একটা অসুখ। কোলেস্টেরল, সেক্স হরমোনের সমস্যা বা অতিরিক্ত ধূমপানের নেশা থেকে এই সমস্যা হতে পারে। বিশিষ্ট ডাক্তারের কাছে এর চিকিৎসা জরুরি। সাধারণত একটু বয়স্কদের এমন প্রিম্যাচিওর ইজ্যাকিউলেশন হয়। তাই ওষুধ দিয়ে তাঁদের যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর আগে হার্ট, প্রেশার ঠিক আছে কি না তা চেক করে নেওয়া উচিত।

সুস্থ থাকতে সপ্তাহে কতবার বীর্যপাত করা উচিত? বহু পুরুষের মনেই এই প্রশ্ন জাগে। সহবাস বা মৈথুনের মাধ্যমে প্রতিদিনই করতে পারেন। তবে সপ্তাহে একদিন করার তুলনায় যাঁরা রোজ বা তিন-চারদিন করেন তাঁদের শরীর বেশি ভাল থাকে। ২০ বছরের পরেই সহবাস শুরু করলে ৪০-৪৫ বছর বয়সের পর যৌন চাহিদা বা বীর্যপাত কমতে থাকে। ৩০-এর পর থেকে যাঁরা সহবাস করেন তাঁদের ক্ষমতা আরও বেশি বয়স পর্যন্ত হয়। তবে বীর্যপাতের সঙ্গে বয়সের তেমন কোনও সম্পর্ক নেই।

গন্ধে কষ্ট: কারও কারও বীর্যে আঁশটে গন্ধ ছাড়ে। দীর্ঘদিন এমন হলে ডাক্তারের পরামর্শমতো কিছু অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।

ত্বকের জন্য ভাল: বীর্যে এমন কিছু উপাদান থাকে যা ত্বকের জন্য ভাল। অ্যাকনে, ডার্ক সার্কল, ত্বক মসৃণ করতে বীর্য থেকে তৈরি ক্রিমের ব্যবহার ভাল। সরাসরি লাগালেও উপকার।

মান ভাল রাখতে: সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে চাইলে স্পার্মের মান ভাল রাখা জরুরি। তাই বেশি করে সবুজ শাক—সবজি, কলা, রসুন খান। নিয়মিত শরীরচর্চা করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

Leave a Reply