Friday, December 20

পরীক্ষার কেন্দ্র অনুমোদনের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র অনুমোদনের অজুহাতে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই হাজার টাকা করে ধার্য করেছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বাধ্য করা হচ্ছে সেই টাকা পরিশোধ করতে।

গত ২২ মে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক চিঠির তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষা পরিচালনার জন্য মৌডুবি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন কেন্দ্র অনুমোদন হয়। ওই চিঠিতে- প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ২৯ মে’র মধ্যে কেন্দ্র স্থাপন ফি বাবদ ১৫ হাজার টাকা ডিডি বা পে-অর্ডারে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড সচিবের অনুকূলে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়।

অথচ এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র অনুমোদন করতে নানা খরচ দেখিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি দুই হাজার টাকা ধার্য করা হয় বলে জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাকরা।

ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, এবার তাদের বিদ্যালয়ে ১১৬ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী। সেই হিসাবে ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা আদায় হওয়ার কথা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক পরীক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র এনেছে এজন্য টাকা নিচ্ছেন শিক্ষকরা। শুধু অভিভাবকদের এ কথা বলতে বলেছে। এছাড়া বাইরের মানুষদের এসব কথা বলতে একদমই নিষেধ করেছে। কেন্দ্র আনতে শিক্ষকরা নাকি ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা দিয়েছে। প্রথমে তিন হাজার টাকা করে চেয়েছে। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে শিক্ষার্থীরা দুই হাজার দিতে রাজি হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, এই জায়গায় পরীক্ষা হবে, এজন্য স্যারেরা বলছে দুই হাজার টাকা লাগবে। আমাদের কষ্ট হয়, রোজগার নাই।

পরীক্ষা কেন্দ্রের অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে মৌডুবি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহম্মেদের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, কেউ যদি বলে থাকে ঠিক বলেনি। কথা বোঝা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সামনাসামনি কথা বলব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর বলেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্যার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। খোঁজ নিয়েছি, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা কোনো টাকা নেননি বলে জানিয়েছেন। তবে তারা কীভাবে টাকা নিচ্ছে, তার তথ্য আমরা চেয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছে, এই কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহা. মুজিবুর রহমান বলেন, এখনই খবর নিচ্ছি। ওখানে অফিসার পাঠাব।

Leave a Reply