Friday, April 19

দেখুন হার্ড অপারেশন কিভাবে করে । যারা ভয় পান দয়া করে তারা ভুলেও দেখবেন না ।

দেখুন হার্ড অপারেশন কিভাবে করে । যারা ভয় পান দয়া করে তারা ভুলেও দেখবেন না ।

সামর্থ্যেই পিছিয়ে বাংলাদেশ

একই যাত্রায় ভিন্ন ফলের প্রবাদ রয়েছে বাংলায়। কিন্তু ভিন্ন যাত্রায়ও তো একই ফল হতে পারে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন যা হচ্ছে আর কি!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ ফাইনালে ধীরগতির উইকেটে খেলে বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্টে ছিল টার্নিং আয়তক্ষেত্র। কাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংবান্ধব ২২ গজ। তিন রকমের উইকেট কিন্তু ফল একই রকম। বাংলাদেশের আত্মসমর্পণ। উইকেট নিয়ে কচকচানি বাদ দিয়ে তাহলে সত্যটা স্বীকার করে নেওয়াই শ্রেয়—সামর্থ্যের দিক দিয়েই শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

মাহমুদ উল্লাহ তা অস্বীকার করেননি। কাল লঙ্কানদের কাছে টি-টোয়েন্টিতে হারের পর ময়দানে পরাজিত সেনাপতির মতোই শোনায় তাঁর কণ্ঠ, ‘যদি ফল চিন্তা করেন, তাহলে তো অবশ্যই কিছুটা হলেও পিছিয়ে আছি।’

এই পিছিয়ে থাকাটা কাল যে এত প্রকট হয়ে ধরা দেবে, বোঝা যায়নি। ১৯৩ রানের স্কোর কম কিসে! এত রান করেও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে হার সে কথাই বলছে। এ জন্য অধিনায়ক মাহমুদ বেশি করে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন বোলারদের, ‘উইকেট ভালো ছিল। ব্যাটসম্যানরা ভালোই করেছে। তবু দুই শ, দুই শর ওপরে হলে ভালো হতো। তার পরও এটা ভালো স্কোর ছিল। কিন্তু বোলাররা ভালো লেংথে বোলিং করতে পারেনি। আমি বলব না লাইন ঠিক ছিল না। কিন্তু লেংথ ভালো ছিল না। এ কারণে হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা শুরুতে দ্রুত উইকেট নিতে পারিনি আমরা।’ দুই দলের পার্থক্যের বিশ্লেষণও করেন তিনি, ‘ওরা শেষের দিকে ইয়র্কারগুলো ভালোভাবে করতে পেরেছে। আমাদের অনেক পথ খুঁজতে হয়েছে রান করতে। যদি মুশির ব্যাটিং দেখেন, স্কুপ-রিভার্স স্কুপ খেলেছে বা ব্লকের বল অফ স্টাম্পের বাইরে এসে মেরেছে। আমাদের বোলাররা সেই লেংথে বল করতে পারেনি। এ জন্যই আজকে এই ফল। তবে ১৯৪ রান অবশ্যই আমাদের ডিফেন্ড করা উচিত ছিল।’

বাংলাদেশ তা পারেনি। এ জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা দানুষ্কা গুণাথিলাকা গুরুত্ব দিয়েছেন ভালো শুরুর ওপর, ‘আমরা শুরু থেকেই আক্রমণ করতে চেয়েছি। কারণ দুই শর কাছাকাছি রান তাড়া করছিলাম। জানতাম, শুরুটা ভালো হলে আমরা জিততে পারব।’ চার ক্রিকেটারের অভিষেক হওয়ার অভিজ্ঞতায় নিশ্চিতভাবেই পিছিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। তবে অনভিজ্ঞতাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাননি সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করা মাহমুদ, ‘অনভিজ্ঞতা বলব না। সাইফ বেশ কয়েকটি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। রুবেল, মুস্তাফিজও খেলছে অনেক দিন ধরে। রুবেল-মুস্তাফিজ আমাদের স্ট্রাইক বোলার ছিল। অপু (নাজমুল ইসলাম) খুব ভালো বোলিং করেছে। তবে শুরুর দিকে লেংথগুলো আমরা ঠিক করতে পারিনি। অনেক জায়গা দিয়েছি। ওরা খুব সহজে বাউন্ডারি পেয়েছে। এগুলো আমরা ভুল করেছি। যেগুলো উচিত হয়নি।’

বোলারদের ব্যর্থতার মিছিলে ব্যতিক্রম শুধু অভিষেক হওয়া বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল। চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। বাকি পাঁচ বোলারেরই ইকোনমি ১০-এর ওপরে। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দুই ওভারে ৩৩ রান দেওয়া। এমনটি তো তিনি প্রথম করলেন না! তবু অধিনায়ক সমর্থনের হাত রাখছেন এই বোলারের ওপর, ‘দৃষ্টিকটু কিছু না। খেলতে খেলতেই ও শিখবে। সাইফউদ্দিনই একদিন ম্যাচ জেতাবে আমাদের বাংলাদেশকে। এটা আমি বিশ্বাস করি। যত দ্রুত ভুলগুলো থেকে শিখবে, ওর জন্য ভালো, আমাদের দলের জন্যও ভালো। আমার মনে হয়, শুধু ওর ঘাড়ে দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। আমরা জিতি দল হিসেবে, হারিও দল হিসেবে। আমার মনে হয় না কারো দিকে আঙুল তোলা ঠিক। পুরো বোলিং ইউনিটই ব্যর্থ হয়েছে অপু ছাড়া। অপু ভালো বোলিং করেছে। আমাদের বোলিং নিয়ে আরো কাজ করতে হবে।’ সাইফউদ্দিনের জন্য এটি শুধুই এক বাজে দিন হিসেবে দেখছেন তিনি, ‘আমার মনে হয় একটা বাজে ম্যাচ গেছে। হয়তো বা ওর পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন করতে পারেনি ও। চেষ্টা করছিল। কিন্তু যে ফিল্ড সেট আপ ছিল, যে লেংথে আমি চাচ্ছিলাম, সেই লেংথে বল করতে পারেনি। আমার মনে হয় এটা নিয়ে সে কাজ করবে।’

গেল বছর শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে টেস্ট-ওয়ানডে-টি টোয়েন্টি কোনো সিরিজে হারেনি বাংলাদেশ। এবার ঘরের মাঠে সব হারানোর দশা। কারণ হিসেবে আবারও ওই বোলারদের কথাই বললেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদ, ‘আমরা ভালো বোলিং করছি না, এটাই মূল পার্থক্য। ভালো জায়গায় বোলিং করলে হয়তো জিততে পারতাম। কিছু সময় ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হচ্ছে, কিছু সময় বোলাররা। একসঙ্গে আমরা জ্বলে উঠতে পারছি না। এটাই মূল কারণ। এর বাইরে কোনো কারণ নেই মনে হয়।
কারণটা না হয় জানা গেল, কিন্তু এর প্রতিকার কী!

Leave a Reply